তুরস্কের ওসমানি সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিলো এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের প্রায় পঁয়ত্রিশটি দেশে। ফলে তাদের সাম্রাজ্যের আওতাধীন দেশগুলোতে তারা বিভিন্ন স্থাপত্য-কীর্তি ও নির্মাণশিল্প গড়ে তোলে।
সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৭৯.৫০ মিটার। আর সেতুর সড়কপথের প্রস্থ চার মিটার। বিশ্ববিখ্যাত কীর্তিমান স্থপতি মিমার কোকা সিনান এর নির্মাতা। তিনি ছিলেন ওসমানি স্থাপত্য-কর্মের ধ্রুপদী কিংবদন্তী। বিখ্যাত এ সেতুটি সিনানের মহৎ শিল্পকর্মের দ্যূতি বাড়িয়েছে। তিনি এতে পাথর ও চুন-সুরকির অনবদ্য মিশেলে তৈরি করেছেন ভিন্ন মাত্রার সৌন্দর্য। খোদাইকৃত ও নিপুণ কুশলতায় মোড়ানো ১১টি খিলান রয়েছে সেতুতে। খিলানগুলো দেখতে ধনুকাকৃতির। দুই খিলানের মাঝের দূরত্ব (স্প্যান) ১১ থেকে ১৫ মিটার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সেতুর তিনটি খিলান এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পাঁচটি খিলান ধসে যায়। পরবর্তীতে অবশ্য খিলানগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয়। অন্যদিকে কয়েক বছর আগে ‘দ্য টার্কিশ কো-অপারেশন অ্যান্ড কোর্ডিনেশন ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’ (TIKA) সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য ৩.৫ মিলিয়ন ইউরো দেয়।
১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে বসনিয়ায় যুদ্ধ চলাকালে ভিসগ্রাদ হত্যাযজ্ঞের সময় অসংখ্য মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। এ সেতু সেই বর্বরতা ও নারকীয়তার সাক্ষী হয়ে আছে। যুগোস্লাভিয়ার নোবেলজয়ী কথাসাহিত্যিক ইভো আন্দ্রিচ ‘দ্য ব্রিজ অন দ্য দ্রিনা’ (দ্রিনা নদীর সেতু) নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন। উপন্যাসের বইটিতে তিনি এ সেতুর আলোচনা এনেছেন। ফলে সেতুটি বিশ্বে এবং বিশেষত ইউরোপে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে।
ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত এ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৫৭৭ খ্রিস্টাব্দে। নির্মাণ শেষে সেতুর নামকরণ করা হয় ওসমানি সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সকোল্লু মেহমেদ পাশার নামানুসারে। তিনি সুলতান প্রথম সোলায়মান ও সুলতান দ্বিতীয় সেলিমের অধীনে সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন:bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
এমএমইউ