ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাদ মাগরিব থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রাতব্যাপী ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে কুরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত, ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ, কিয়াম, যিকির, দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত।
সন্ধ্যার পর দেখা যায় হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি টুপি-পাঞ্জাবি পরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আসছেন। মূলত সন্ধ্যার পর থেকে জাতীয় মসজিদে শবে বরাতের কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
আর শবে বরাত উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও এর আশেপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠানমালার শুরুতে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে ছিলো ‘শবে বরাতের ফজিলত’ শিরোনামে ওয়াজ, পেশ করেন রাজধানীর তেজগাঁও মদীনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুর রাজ্জাক আল আযহারী।
রাত ৯টা ৫ মিনিটে ‘ইবাদত ও দোয়ার গুরুত্ব’ শীর্ষক ওয়াজ মাহফিলে বয়ান করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন কাসেম। রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ‘শবে বরাত ও রমজানের তাৎপর্য’ শিরোনামে ওয়াজ পেশ করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা এহসানুল হক জিলানী। রাত ১টা ৫৫ মিনিটে ‘তাহাজ্জুদের গুরুত্ব ও ফজিলত’ শিরোনামে ওয়াজ করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সবশেষে ফজরের নামাজের পর আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। মোনাজাত পরিচালনা করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এদিকে, শ্রীলঙ্কায় কয়েকটি স্থানে বোমা হামলায় বহু হতাহতের পর বাংলাদেশে পবিত্র এ রজনীতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক করেছে সরকার। অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে বায়তুল মোকাররমেও সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
মুসল্লিদের জায়নামাজ ছাড়া ব্যাগ বা অন্য কিছু নিয়ে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে পুলিশ। সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে গিয়ে দেখা যায় ব্যাগ নিয়ে কোনো মুসল্লিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এই ফটকে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোলায়মান জানান, পবিত্র রজনী ঘিরে বায়তুল মোকাররম এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। আশপাশে দোকানপাট বন্ধ ছাড়াও কোনো যানবাহনকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।
রাজধানীর অন্য মসজিদেও পবিত্র এ রজনীতে মুসল্লিদের ভিড় ছিল চোখেপড়ার মতো। পুরান ঢাকার বায়তুস সালাম জামে সমজিদে দেখা যায় বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি নামাজসহ নফল ইবাদত করতে শামিল হয়েছে।
মুসল্লিরা এক মসজিদ থেকে আরেক মসজিদেও নামাজ আদায় করতে যাচ্ছেন। আর বাসা-বাড়িতে রুটি-হালুয়া করে আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে দেওয়ার রেওয়াজও রয়েছে।
শবে বরাতকে বলা হয় সৌভাগ্যের রজনী, এ বিশ্বাস নিয়ে মুসলমান সম্প্রদায় অতীতের গুনাহ মাফ এবং আগামী সুন্দর দিনের প্রত্যাশায় ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রাত পার করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯
এমআইএইচ/জেডএস