ইতোমধ্যে কচুয়া, মোংলা, শরণখোলা, চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও রামপাল উপজেলা সদরের মসজিদ কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হয়েছে। জমি না পাওয়ায় জেলা সদর ও বাগেরহাট সদর উপজেলার মসজিদের কাজ শুরু হওয়া এখনও অনিশ্চত।
মসজিদগুলো চালু হলে ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক আল-ফারুক।
গণপূর্ত বিভাগ বাগেরহাট সূত্রে জানা যায়, ‘৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সংস্কৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’র আওতায় বাগেরহাটের ৯টি উপজেলা ও জেলা সদর (বাগেরহাট পৌরসভা) একটি করে আধুনিক মডেল মসজিদ নির্মাণ হবে। ৪৩ শতক জমির উপর এ মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স হবে।
জেলা সদরে ৪ তলা ও উপজেলাগুলোতে তিন তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। পুরো জমিতে সীমানা প্রাচীর থাকবে। মূল মসজিদ-কমপ্লেক্স ভবন হবে ১৬ হাজার ১শ ৫০ বর্গফুট। ভবনের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা ও সৌন্দর্য্য-বর্ধনের ব্যবস্থাও থাকবে।
ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে মুসলিম স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিন দায়িত্ব পালন করবেন। তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হবেন। এর পাশাপাশি মসজিদগুলোতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের অফিস থাকবে। কমপ্লেক্সে একটি হলরুম থাকবে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে সকলে ওই হলরুম ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। মসজিদগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশপাশি শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ পাবে। জেলা সদরের জন্য ১৫ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ও উপজেলা সদরে প্রতিটি মসজিদের জন্য ১৩ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
এদিকে ৭টি উপজেলা সদরের মসজিদের কাজ শুরু হয়ে পাঁচ শতাংশ শেষ হলেও জমি নির্ধারণ না হওয়ায় জেলা সদর, সদর উপজেলা, ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এ তিনটি মসজিদের কাজ যথাসময়ে শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জমির জন্য বারবার বাগেরহাট ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে চিঠি দিলেও তারা জমির ব্যবস্থা করতে পারেননি বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।
বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম বাংলানিউজকে বলেন, জেলার ১০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের দরপত্র আহবান ও আনুসঙ্গিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। জমি প্রাপ্তি সাপেক্ষে কচুয়া, মোংলা, শরণখোলা, চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও রামপাল উপজেলা সদরের মসজিদ নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এসব মসজিদের জমির মাটি পরীক্ষাসহ প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পাইলিংয়ের কাজও শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলা সদর, সদর উপজেলা, ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার জন্য নির্ধারিত জমি না থাকায় আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না। জেলা সদরের মসজিদের জন্য পুরো জমি, সদর উপজেলা, ও মোরেলগঞ্জের জন্য নির্ধারিত জমির আংশিক অধিগ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহনের জন্য টাকা বরাদ্দ না থাকায় অধিগ্রহণ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তিনি প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাগেরহাটের উপ-পরিচালক আল ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, সব জেলা ও উপজেলায় মডেল মসজিদ-কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতি ও রীতি-নীতি যেমন বিকাশ লাভ করবে, তেমনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধেও প্রচারণা চালানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া সারা বাংলাদেশে ৫০০ মসজিদে অনেক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
এমএমইউ