রাগ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কমবেশি সবার মধ্যে রাগ লুকিয়ে থাকে।
রসুলুল্লাহ (সা.) রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তার উম্মতের প্রতি জোর তাগিদ প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, সেই ব্যক্তি শক্তিশালী নয় যে কুস্তি লড়ে অন্যকে ধরাশায়ী করে, বরং প্রকৃতপক্ষে সে ব্যক্তিই শক্তিশালী যে রাগের সময় নিজেকে সংবরণ করতে পারে (বুখারি)।
মানুষের রাগ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এ রাগ যখন সব কিছু ধ্বংসের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখনই একটি জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। রাগের কারণে অন্যের ক্ষতি করা হয়। রাগ ও ঝগড়া থেমে গেলে বোঝা যায় কতটা ক্ষতি হয়ে গেছে।
রেগে যাওয়া মানেই হেরে যাওয়া। রাগ করে কেউ বড় কিংবা সুখী হতে পারেনি। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে রাগ করা হয়, যে-কোনো বিষয় সহজ করে নিলেই তা সহজে মীমাংসা হয়ে যায়। আপনি যখন রাগান্বিত হবেন কিংবা আপনার সঙ্গে কেউ রাগান্বিত হবে তখন অবশ্যই আপনি চুপ থাকবেন। চুপ থাকার মাধ্যমে রাগ কমে যাবে এবং অতিরিক্ত ঝগড়া হবে না।
এ বিষয়ে মুসনাদে আহমদে উল্লেখ রয়েছে, রসুল (সা.) বলেছেন- তোমরা শিক্ষা দাও এবং সহজ কর, কঠিন কোরো না, যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাক; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাক, যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাক।
রাগ মানুষকে ক্ষতি করে, সংসারসহ ধ্বংস করে একটি জীবন। রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তাই রাগান্বিত অবস্থায় শয়তানের পক্ষ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতে হবে। রাগ বা ঝগড়ার সময় আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজিম পড়ার মাধ্যমে শয়তান পালিয়ে যায়, ফলে রাগ ও ঝগড়া কমে যায়। এ ছাড়া অজুর মাধ্যমে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে। আর শয়তান আগুনের তৈরি। নিশ্চয়ই পানির দ্বারা আগুন নির্বাপিত হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন রাগান্বিত হয় সে যেন অজু করে (আবু দাউদ)।
যাদের মধ্যে অতিরিক্ত রাগ রয়েছে তা আজই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও হাসিমুখে কথা বলতে হবে। রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত জিকির, দরুদ পাঠ, ইস্তিগফার, কোরআন তিলায়াতসহ নফল নামাজ আদায় করতে হবে।
নামাজ শেষে রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য দোয়া করা। রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম্ন দোয়াটি পাঠ করা যেতে পারে- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আদলা ফিল গাদাবি ওয়ার রিদা। অর্থ হলো- হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ক্রোধ ও সন্তুষ্টি উভয় অবস্থায়ই মধ্যমপন্থা কামনা করি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২২
জেডএ