ঢাকা: স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আকারে আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে দুই ভাগে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ও ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে এ বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ ও আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, কেবিনেট সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয়ের সচিবরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ঢাকার টঙ্গীতে যে ঐতিহাসিক বিশ্ব ইজতেমা হয়ে থাকে গত দুই বছর করোনার জন্য তা অনুষ্ঠিত হয়নি। এবছর করোনা নিয়ন্ত্রণ হওয়াতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন আগামী বছর ২০২৩ সালে টঙ্গীর মাঠে ঐতিহাসিক জায়গায় বিশ্ব ইজতেমা যেন সংক্ষিপ্ত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হয়। সেজন্য আজকে এ সভাটি করেছিলাম।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন এ ইজতেমা করতে গিয়ে একটু মতবিরোধ রয়েছে, এখনও আছে। মতবিরোধ নিরসণে গতবার আমরা দুই ভাগে ইজতেমা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম তারা সেটা করেছে। এবারও ঠিক সেভাবে করতে বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন এক দলের নেতা হলো মাওলানা যুবায়ের আহমদ এবং অন্যদলের নেতা হলো ওয়াসিফুল ইসলাম। দুই জনই আগে এক সঙ্গে তাবলিগ করতেন। এখন তারা দুজন দুই প্রান্ত চলে গেছেন। তাদের সবাইকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তারা এসেছেন। তারা যেন বিশ্ব ইজতেমা সুন্দরভাবে সুসম্পন্ন করেন তার একটা অনুরোধ রেখে ছিলাম। পাশাপাশি আরও একটি অনুরোধ করেছি যে দুই জন একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত দেন কে আগে করবেন কে পরে করবেন। কিংবা একসঙ্গে করতে পারবেন কিনা। তারা একসঙ্গে করতে একমত হতে পারেননি। কিংবা কে আগে করবেন কে পরে করবেন সে বিষয়ে এক মত হতে পারেননি। আমাদের ওপর সিদ্ধান্তের ভার দিয়েছিল। আমরা তখন তাদের জানিয়ে দিয়েছি। আমরা কোনো কিছু পরিবর্তন করবো না। গতবার যেভাবে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল আগামী বছর সেভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়টি তারা উভয় মেনে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, আজকে বিশ্ব ইজতেমা তারিখ নির্ধারিত সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুইবারে আয়োজন করা হবে। প্রথম পক্ষ যুবায়ের গ্রুপ আগামী ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন করবে। প্রথম পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেবে। প্রশাসন মানে পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় মেয়রকে মাঠ সুন্দর করে বুঝিয়ে দেবে।
এরপর দ্বিতীয় গ্রুপ মাঠ ইজতেমার উপযোগী করে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন করবেন। আমরা মনে করি টঙ্গীতে যে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় সেটার জন্য সারা বিশ্বের মানুষ তাকিয়ে থাকতো। সে ইজতেমা আবারো শুরু হবে।
বিদেশি মেহমানদের নিরাপত্তার কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত তারা আলাপ করবে তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। যেসব বিদেশি এখানে আসবে তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসতে হবে। আর ছোট বা সীমিত পরিসরে করার জন্য তাদের বলা হয়েছে। তারা সেটিই করবে।
হজ নিয়ে সৌদিআরব সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়, এখানে কি সে ধরনের কোনো কিছু থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা নির্ধারণ হয়নি। বিদেশি আসার জন্য একটা তালিকা দিয়ে থাকেন। তাদের আলাদা তবলীগের জন্য বিশেষ ভিসা দেওয়া হয়। সেগুলো তারা পর্যায়ক্রমে করবেন। আমরাও পর্যায়ক্রমে ভিসা ও বাংলাদেশে আসার অনুমতি সেভাবেই দেবো।
সংক্ষিপ্ত আকারের যে কথা বললেন সেটা কীভাবে নির্ধারণ করবেন সে রকম কি কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রথমে বলেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। সেটা মেনে চললে আর করোনার সময় যেমন একটু দূরে বসা, মাস্ক পরা, টিকা ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবে না। এ ধরনের কিছু বিষয় মেনে চলবে। গতবছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা তাবলিগ করেন সেই নেতাদের বলেছি তারা যেন গতবাবের থেকে এবছর সংখ্যা কমিয়ে আনে সে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস