ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

নববর্ষের অনুষঙ্গ: পান্তাভাত কালবৈশাখী বৈশাখী মেলা

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১২
নববর্ষের অনুষঙ্গ: পান্তাভাত কালবৈশাখী বৈশাখী মেলা

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশজুড়ে চলে নানা উৎসব। আর এসব উৎসবের মাঝে রয়েছে কিছু অপরিহার্য অনুষঙ্গ।

নিচে কয়েকটি অনুষঙ্গের কথা তুলে ধরা হলো...

পান্তাভাত
অনেক বছর আগে বাংলার কৃষক-কৃষানিরা চৈত্র সংক্রান্তি অর্থাৎ বাংলাবর্ষের শেষ রাতে একটি ঘটির মধ্যে অসিদ্ধ চাল, পানি, কচি আমের ডাল দিয়ে রাখত। সকালে কৃষানি ওই আমের ডাল, চাল পানির মধ্যে ভিজিয়ে কৃষক ফসলের মাঠে যাওয়ার আগে পরিবারের সবার শরীরে ছড়িয়ে দিতো। একই সঙ্গে ভেজা চাল প্রত্যেকের হাতে দিতো।

তাদের বিশ্বাস ছিল, বছরের প্রথম দিনে এই রীতি পালন করলে সারা বছর ধরে কৃষক পরিবারে সুখ-শান্তি বজায় থাকবে। ভালো ফসল হবে।

পণ্ডিতরা মনে করেন, এরই বিবর্তিত রূপ হলো পান্তাভাত। যা পহেলা বৈশাখে শহরের মানুষ মাটির সানকিতে ১০০-২০০ টাকা দিয়ে কিনে খায় আজকাল।

কালবৈশাখী
কালবৈশাখী শব্দটির সঙ্গে আমরা খুবই পরিচিত। মজার ব্যাপার হচ্ছে বাংলা নববর্ষের মধ্য দিয়েই কালবৈশাখীর সূচনা। সচরাচর এপ্রিল-মে মাসে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ঝড় কালবৈশাখী নামে পরিচিত। গ্রীষ্ম ঋতুর সঙ্গে সঙ্গে এই ঝড়ের আগমন ঘটে। অধিক তাপমাত্রায় ভূ-পৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে এর প্রভাবে বায়ুমণ্ডল যথেষ্ট অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং এই ঝড়ের জন্ম হয়।

সাধারণত শেষ বিকেলে কালবৈশাখী শুরু হয়। কালবৈশাখীতে বাতাসের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৬০ কিলোমিটার হয়ে থাকে। কখনো কখনো এরচেয়ে বেশি গতিতেও ঝড় বয়ে যায়। স্থায়িত্বকাল সচরাচর কম হলেও কালবৈশাখী কখনো কখনো এক ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী হয়।

বৈশাখী মেলা
পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ৩ শতাধিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৈশাখে এসব মেলা হয়ে আসলেও মেলাগুলো বর্ষবরণ মেলা, নববর্ষের মেলা, বান্নি মেলা আবার কোথাও এলাকা, ব্যক্তি কিংবা অন্যান্য নামেও  অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

বিভিন্ন নামের মেলাগুলোর মধ্যে বগুড়া জেলার গাংনগর মেলা, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের কারণী আনন্দ মেলা, কুমিল্লা জেলার কান্দিরপাড়, ময়মনামতি, চান্দলা মাধাইয়া, চৌয়ারা এবং বাতিসার মেলা, সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জের ভুলু দেওয়ানের মেলা, পাগলনাথের মেলা, পূর্বঘোলা মেলা ও মরজাল সমতা মেলা, গাইবান্ধা জেলাধীন সাদুল্ল্যাপুরের পীরেরহাট বান্নিমেলা, গোবিন্দগঞ্জের বিরাট মেলা, কুড়িগ্রাম জেলার সিন্দুরমতি মেলা, বরিশালের বানারীপাড়ার বাইশারী মেলা ইত্যাদি।

১ দিন থেকে মাসব্যাপী এসব মেলায় হা-ডু-ডু, কুস্তি লড়াই, লাঠিয়াল নাচ, পুতুল নাচ, সার্কাস, মোরগ লড়াই, ঘুড়ি ওড়ানো, ষাড়ের লড়াইসহ মজার মজার আয়োজন থাকে। একসময় এসব মেলায় জনপ্রিয় অনুসঙ্গ ছিল বায়োস্কোপ বাক্স। কিন্তু এখন এটি আর দেখা যায় না। তবে অনেক জায়গায় পুতুল নাচ, সার্কাসের আয়োজন করা হয়।

সম্পাদনা: আরিফুল ইসলাম আরমান, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি/ আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।