ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ছোটদের হুমায়ূন আহমেদ

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১২
ছোটদের হুমায়ূন আহমেদ

ঢাকা: হুমায়ূন আহমেদের নাম তোমরা সবাই নিশ্চয়ই শুনেছ। তার লেখা বই তোমরা অনেকেই পড়েছ।

সম্প্রতি চলে গেছেন জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিক।

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুর মহকুমার এসডিপিও হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ হন হুমায়ূন আহমেদের বাবা।

ছোটবেলা হুমায়ূন আহমেদের নাম রাখা হয়েছিল ছিল শামসুর রহমান, ডাকনাম কাজল। পরবর্তীতে তিনি নিজেই নাম পরিবর্তন করে ‌‌‌হুমায়ূন আহমেদ রাখেন। তার ভাষায়, তাঁর বাবা ছেলে-মেয়েদের নাম পরিবর্তন করতে পছন্দ করতেন।

হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই হচ্ছেন তোমাদের সবার প্রিয় কল্পকাহিনী লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আরেক ভাই আহসান হাবীব বাংলাদেশের প্রখ্যাত রম্য সাহিত্যিক এবং কার্টুনিস্ট।

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বাংলা সাহিত্যের ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং নাট্যকার। তাকে বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ বলা হয়। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের কিছুদিন অধ্যাপনাও করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। ২০১২ সালের শুরুর দিকে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ দূতাবাসে সিনিয়র স্পেশাল অ্যাডভাইজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাবার চাকুরি সূত্রে হুমায়ূন আহমেদ দেশের বিভিন্ন স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি বগুড়া জেলা স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি (সম্মান) ও এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পলিমার রসায়ন বিষয়ে গবেষণা করে পিএইচডি লাভ করেন হুমায়ূন আহমেদ।

১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য নাটক রচনা শুরু করেন। তার অন্যতম ধারাবাহিক নাটকগুলোর মধ্যে এইসব দিন রাত্রি, বহুব্রীহি, কোথাও কেউ নেই, নক্ষত্রের রাত, অয়োময়, আজ রবিবার উল্লেখ্যযোগ্য। এদের বেশিরভাগই ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ এর দশকে নির্মিত।

টেলিভিশনের জন্য একের পর এক দর্শক-নন্দিত নাটক রচনার পর হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তাঁর পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র আগুনের পরশমণি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। ২০০০ সালে শ্রাবণ মেঘের দিন ও দুই দুয়ারী চলচ্চিত্র দুটি প্রথম শ্রেণীর দর্শকদের কাছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন চন্দ্রকথা নামে একটি চলচ্চিত্র। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মাণ করেন শ্যামল ছায়া চলচ্চিত্রটি। এটি ২০০৬ সালে "সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র" বিভাগে একাডেমি পুরস্কার এর জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এছাড়াও চলচ্চিত্রটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। তাঁর সব চলচ্চিত্রে তিনি নিজে গান রচনা করেন। ২০০৮-এ আমার আছে জল চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে তার পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ঘেটুপুত্র কমলা (চলচ্চিত্র) ।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ নয় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের বেলেভ্যু হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন হুমায়ূন আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১২

সম্পাদনা: আরিফুল ইসলাম আরমান, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।