ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

চলো মীনাকে জানি

রাজীব কুমার সাহা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১২
চলো মীনাকে জানি

কার্টুন দেখতে কে না ভালোবাসে। বাচ্চাদের দোহাই দিয়ে কম যায় না বড়রাও।

একটা সময় পর্যন্ত শিশু-কিশোরদের কার্টুন ছাড়া চলে না একদিনও। মায়ের কাছে বাবার তাদের যত বায়না কার্টুন নিয়ে। খাবার খাওয়া, পড়তে বসা, স্কুলে যাওয়া সবকিছুর শর্ত কার্টুন দেখতে দিতে হবে। তাই না?

বন্ধুরা তোমদের মধ্যে এমন একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না যে কার্টুন দেখনা। কার্টুনের জনপ্রিয় চরিত্রগুলো নিশ্চয় তোমাদের হাসায়, আনন্দ দেয় আবার অনেক সময় কাঁদায়। তোমরা মাঝে মাঝে হতে চাও কার্টুনে দেখা চরিত্রের মতো। কখনো মীনা, কখনো ডোরেমন আবার কখনো পোকেমন। কি, ভুল বললাম?  

পরিবারের লক্ষ্মী মেয়ে মীনাকে নিশ্চয় তোমরা ভোলোনি। ভুলবেই বা কি করে, মীনা যে কাজগুলো করে তার সবই তো তোমরা করো। কতকিছু শেখায় মীনা আমাদের। তাই না?

কিন্তু তোমরা কি জানো, মীনা কার্টুন শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত একটি জনপ্রিয় টিভি কার্টুন।
meena-1
মীনা কার্টুন প্রথম বের হয় ধারাবাহিকভাবে কমিক বই আকারে। যা তোমরা সবাই বই আকারে বাড়িতে পড়েছো। ১৯৯১ সালে ইউনিসেফের উদ্যোগে কার্টুন চরিত্র হিসেবে মীনার জন্ম। এর জনক মুস্তাফা মনোয়ার। বাংলাদেশে প্রথম ১৯৯৫ সালে বিটিভিতে মীনা কার্টুন দেখানো শুরু হয়।

তোমরা কি জানো মীনা দিবস কবে? তাহলে শোনো, মীনার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করে ১৯৯৮ সালে সার্কের পক্ষ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরকে ঘোষণা করা হয় মীনা দিবস। সেসময় থেকে প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর দিনটি পালিত হয়ে আসছে মীনা দিবস হিসেবে।

মীনা, রাজু, মিঠু, স্কুলের বড় আপা কিন্তু শুধু তোমাদের আনন্দ দেয় না, অনেক কিছু শিখতে পারো তাদের কাছ থেকে। শুধু আনন্দ পেলে কিন্তু হবে না। তোমাদের হতে হবে মীনার মতো উপকারী বন্ধু।

তোমরা নিশ্চয় এতোদিন দেখেছ মীনা বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা, মেয়েদের স্কুলে পাঠানো, কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে থেকে স্কুলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, যৌতুক বন্ধ করা, ছেলে-মেয়ে সমান পুষ্টি ও সুযোগ-সুবিধার নিশ্চিত করা প্রভৃতি বিষয়ে তোমাদের সচেতনতামূলক অনেককিছু বলেছে, নিজে করে দেখিয়েছে। তোমাদেরও কিন্তু তার মতো হতে হবে।
mina-2201
মীনা কিন্তু করে দেখিয়েছে যে প্রয়োজনীয় ও সমঅধিকার পেলে মেয়েরাও অনেক কিছু হতে পারে, করতে পারে। শহরের বাসায় বাসায় কাজে সাহায্য করে এমন মেয়েদের প্রতি সুবিচার ও তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা, সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ, সুশিক্ষা গ্রহণে প্রয়োজনীয় উপকরণের যোগান প্রভৃতি বিষয়েও কিন্তু মীনা তোমাদের কাজ করতে উৎসাহ দিয়েছে।

এখন তোমাদেরও মীনার মতো সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে, পড়ালেখা করতে হবে, ঘরের কাজ শিখতে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে, খাবার সবাইকে সমান করে দিয়ে খেতে হবে, বন্ধুদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে, আবার সবাইকে নিয়ে খেলাধুলাও করতে হবে। তোমরা যদি মীনার মতো হতে পারো, তাহলে জীবনে অনেক উন্নতি করতে পারবে। সবাই ভালোবাসবে, আদর করবে তোমাকে। কি পারবে না, মীনার মতো হতে?

মীনার কথা বলতে বলতে মিঠুর কথা তো ভুলেই গেছি। মীনা তো তোমাদের প্রিয়। কিন্তু মিঠু একটু বেশি প্রিয়। ঠিক না? মিঠুও কিন্তু অনেক ভালো। সে মীনার বিপদে-আপদে উপকারী বন্ধু। তোমাদের বন্ধুরাও যেন হয় মিঠুর মতো।

তো বন্ধুরা, আমরা শুধু মীনা কার্টুন দেখবো না বরং আগামী দিন থেকে মীনা কি কি করে তাও আমরা ভালোভাবে লক্ষ্য করবো। সেগুলো নিজের করার, মানার চেষ্টা করবো নিজেও। চেষ্টা করবো মীনার বার্তা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে কাজে লাগাতে। এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা। আগামীতে আবার দেখা হবে তোমাদের প্রিয় অন্য এক কার্টুন বন্ধু নিয়ে।

বংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১২
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।