ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ওরা জানতে চায়

মুক্তিযুদ্ধ আর বিজয়ের কথা

সাইদ আরমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০
মুক্তিযুদ্ধ আর বিজয়ের কথা

ঢাকা: ‘আমার দাদা জয়নাল আবেদীন শিকদার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি তার কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছি।

আর সেই গল্পই বলবো তোমাদের।

সেই ভয়াল দিনগুলোর কথা তিনি আজও ভোলেননি। নিজের জীবনের কোনো মায়া করেননি তিনি। দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করতে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন।

তার মনে আজও অনেক কষ্ট। তারা যুদ্ধ করে কী পেয়েছেন। দেশে আজও অশান্তি। মানুষের মধ্যে হাহাকার। কষ্টের শেষ নেই। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল, তারা সগর্বে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ’

এভাবেই মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী এবং মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল আবেদীন শিকদারের বর্ণনা করা ভাষ্য পাঠ করছিল ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাবীন।

জাবীন মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, তার দাদার কাছে শুনেছে। দাদার বর্ণনা সংগ্রহ করে পাঠ করতে বুধবার ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এসেছিল।

জাবীনের মতো মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেনের ভাষ্য পাঠ করতে এসেছিল বরিশালের সেন্ট আলফ্রেডস হাই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর সুবর্ণা আক্তার।

‘একদিন এক মেম্বারের বাড়িতে আমাদের দাওয়াত। সন্ধ্যার পর আমরা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা খেতে যাই। হঠাৎ শুনি পাকি হানাদাররা হামলা করেছে। আমরা অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে যাই। পাকিদের গুলিতে আমাদের দু’জন সহযোদ্ধা নিহত হয়। পরে জানতে পারি ওই হামলা ওই এলাকার চেয়ারম্যানের পরিকল্পনায় করা হয়। ’

‘মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য পাঠ’ এমনই এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। মূলত নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রান্তিক ঘটনাবলীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই তাদের এই আয়োজন। তাই দর্শকের সারিতেও ছিল শিশু-কিশোররা। যাদের কেউ যুদ্ধ দেখার কথা নয়। অনেকে শোনেওনি।

মায়ের হাত ধরে এসেছিল ৯ বছরের ছোট্ট আলিফ। কেন এখানে এসেছ জানতে চাইলে ঠিকই জানায়, মুক্তিযুদ্ধাদের বলা গল্প শুনতে। আলিফের মতোই দর্শক সারিতে ছিলে শিশু-কিশোররা।

একে একে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা নিয়ে মঞ্চে আসে বরিশালের বাবুগঞ্জ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আসমা আকতার, খুলনার চুকনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কানিজ ফাতিমা নিশা, ফুলতলা বালিকা বিদ্যালয়ের বন্যা কুণ্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন রহমান তাজ। ওরা সবাই নিকটজনের কাছ থেকে শোনা কথা বন্ধুদের শোনাতে এসেছিল। কেউবা শোনাল দাদার কথা। কেউ বাবার।

কথা হয় খুলনা থেকে আসা জ্যোতি এবং হৃদয়ের সঙ্গে। দু’জনের কেউই মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বেশি কিছু জানে না। তবে জানার আগ্রহ নিয়ে এসেছে। জ্যোতি এবং হৃদয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে চায়। ওরা যুদ্ধাপরাধ না বুঝলেও যুদ্ধের সময় যারা বিপক্ষে ছিল তাদের বিচার চায়।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।