ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

মুসা ইব্রাহীম-এর

এলব্রুস জয়ের গল্প

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৩
এলব্রুস জয়ের গল্প

যেকোনো বিজয় মানুষকে আনন্দ দেয়। দেশকে প্রতিনিধিত্বকারী বিজয়গুলোয় এই আনন্দটা হয় অসীম।

কারণ পুরো দেশের মানুষ এতে উদ্বেলিত হন। তারা একে মনে করেন নিজেদেরই জয়। ঠিক এমন অনুভূতিই হয়েছিল যখন আমরা টিম বাংলাদেশের অভিযাত্রীরা ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বত এলব্রুস জয় করে রাশিয়ার মস্কোয় ফিরেছিলাম।

সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে হাজির হওয়ার পর যেন অনুভব করেছি Ñ মস্কোর মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশ। প্রতিটি বাংলাশি এই অর্জন নিয়ে গর্ব করছেন। সেই অর্জনটা কেমন? ওয়াসফিয়া নাজরিন আগেই এ পর্বত জয় করে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন। কিন্তু এবারের অভিযানের বিশেষত্বটা ছিল অন্যরকম। তা হলো Ñ এই প্রথম ককেসাস পর্বতমালার সর্বোচ্চ পর্বত এলব্রুসে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মৈত্রী অভিযান পরিচালিত হলো। আর তা প্রথমবারেই সফল।

এই মৈত্রী পর্বতাভিযানে আমরা গত ২৬ জুন রাশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বত এলব্রুসের চূড়ায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পতাকা উড়িয়েছি। অভিযানে অংশ নিয়েছিলাম টিম বাংলাদেশের অধীনে। এভারেস্ট একাডেমি ও নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশের সহযোগিতায় সাইক্লিস্ট ও পর্বতারোহী সিফাত ফাহামিদা নওশিন ইতি, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়াজ মোরশেদ পাটওয়ারী এবং আমি।

এ অভিযানের স্লোগান ছিল ‘পর্বতারোহণের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জিং বিশ্বে সবাইকে সফল করে তোলা’। অভিযানে বাংলাদেশি অভিযাত্রীদের সঙ্গে রুশ গাইড ডালহাত ওলমেঝভ এদিন এলব্রুস পর্বত জয় করেন।

আমরা ছিলাম একটা ‘টিম’। এটা ছিল একটা দলগত সাফল্য। এলব্রুস পর্বতে প্রথম বাংলাদেশÑরাশিয়া মৈত্রী অভিযান আয়োজন থেকে শুরু করে চূড়া জয় করে সেখানে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পতাকা ওড়ানো পর্যন্ত Ñ সবকিছুই করা হয়েছে দলগত আয়োজনে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে। এভাবে পর্বত জয়ের মধ্য দিয়ে দুদেশের সৌহার্দ্যের বন্ধন বাড়িয়ে তোলার উদ্যোগ একেবারেই হাতে গোনা।

আরেকটা ব্যাপারÑ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া বাংলাদেশকে অকৃত্রিম সহায়তা দিয়েছিলো। সেই সম্পর্কের গুরুত্বটা এ অভিযানের শুরুতে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী ফারুক খান ও  বাংলাদেশে রুশ দূতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগের ফার্স্ট সেক্রেটারি ও হেড অব দি ডিপার্টমেন্ট আলেক্সাজান্ডার পি. ডেমিন এবং প্রটোকল অফিসার আর্টুর জাকায়েভ ‘ফ্ল্যাগ অফ’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবিস্তারে সবাইকে জানিয়েছিলেন।

পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন দেশ Ñ বাংলাদেশের আবির্ভাবের সময়কালে রাশিয়ার এই শর্তহীন সহযোগিতার মর্যাদা রাখতে টিম বাংলাদেশের অভিযাত্রীরা তাই সর্বান্তকরণে সচেষ্ট ছিলেন। যাতে সৌহার্দ্যের বন্ধনটা অ্যাডভেঞ্চার, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে যুগ যুগ টিকে থাকে। আমরা এই সুখস্মৃতিকে লালন করে চলেছি।

আরেকটা কথা। আমরা করবো জয় Ñ বিশ্বাস করলে তিন শব্দের এই কথার গুরুত্ব অনেক। সেটা শুরু হয়েছিল তো সেই ১৯৭১ সালেই। আজও এ কথাটা অমলিন। আমরা বিশ্বাস করি বলেই বহু বাধার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি। আর পর্বত জয়ের ক্ষেত্রে তো আত্মবিশ্বাসের কোনো বিকল্পই নেই। পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে পর্বত অভিযানে নামতে হয়। টিম বাংলাদেশের অভিযাত্রীরা এক্ষেত্রে ছিলেন শতভাগ দায়িত্ববোধসম্পন্ন। এই আত্মবিশ্বাসই আমাদের নিয়ে গেছে স্বপ্নচূড়ায়। আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম কল্পনার সমান। আর কঠোর পরিশ্রম করেছি তা অর্জন করার জন্য।

রাশিয়ার কাবারডিনো বলকারিয়া রিপাবলিক এবং কারাচে-চেরকেশিয়া রিপাবলিকের মধ্যে অবস্থিত এই পর্বতটি মূলত একটি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। গ্লোবাল ভলকানিজম প্রোগ্রাম’র সূত্রমত্রে, এই আগ্নেয়গিরি থেকে সর্বশেষ খ্রিস্টপূর্ব ১০০ সালের আগে লাভা উদগীরণ হয়েছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এলব্রুস পর্বতমালা এলাকায় তীব্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

আমরা গত ১৩ জুন রাশিয়ার মস্কো থেকে রওয়ানা দিয়ে এলব্রুস পর্বতের সাউথ রুটের পাদদেশ আজাউ ভ্যালি পর্যন্ত হাজির হয়েছি। প্রায় ৭ হাজার ৫৪৪ ফুট উঁচু এই আজাউ ভ্যালি থেকেই ১৪ জুন থেকে শুরু হয় মূল অভিযান। এদিন আমাদের সঙ্গে গাইড ডালহাত ওলমেঝভের পরিচয় হলো। শুনলাম তিনি এর আগে পঞ্চাশোর্ধ্ববার এলব্রুস পর্বত জয় করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে এলো। তিনি আমাদেরকে এলব্রুস পর্বত জয়ের একটা ছক কষে দিলেন।

তার পরিকল্পনামতে প্রথম দু’দিন পর্বতের উচ্চতার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাওয়ানোর জন্য হাইকিং করা হবে। প্রথমদিন আজাউ ভ্যালি থেকে এলব্রুস পর্বতের রুটে প্রায় তিন হাজার মিটার উচ্চতায় থাকা ক্রুগাজর নামক একটি জায়গা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসব। দ্বিতীয়দিন ফের আজাউ ভ্যালির অনতিদূরে ট্রেসকল ভিলেজ থেকে ট্রেকিং শুরু করে প্রায় তিন হাজার পঞ্চাশ মিটার উচ্চতায় থাকা ওয়েদার অবজারভেশন টাওয়ারে যাব। এরপর ফের আজাউ ভ্যালিতে ফিরে আসা।

তৃতীয়দিন বিশ্রাম এবং এলব্রুস পর্বতারোহণের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রায় তিন হাজার আটশ মিটারে থাকা সেকেন্ড ক্যাম্প ব্যারেল হাট বা গারা বাসিতে রাত্রিযাপন ও রসদের সব আয়োজন করতে হবে। চতুর্থ দিন আজাউ ভ্যালি থেকে ব্যারেলে পৌঁছে ব্যাগপত্র রেখে প্রায় চার হাজার দুইশ মিটার উচ্চতায় থাকা প্রিউট ইলেভেন নামক একটি জায়গা পর্যন্ত গিয়ে গারা বাসিতে এসে রাত্রিযাপন করা হবে। পঞ্চম দিন ব্যারেল থেকে প্রায় চার হাজার সাতশ মিটার উঁচু পার্সটুহভ রক পর্যন্ত গিয়ে ফের গারা বাসিতে রাত্রিযাপনের পরিকল্পনা।

ষষ্ঠদিন বিশ্রাম এবং এদিন রাতের বেলাতেই প্রায় ৫ হাজার ছয়শ বিয়াল্লিশ মিটার বা ১৮ হাজার পাঁচশ দশ ফুট উঁচু এলব্রুস পর্বত জয়ের জন্য গারা বাসি বা সেকেন্ড ক্যাম্প থেকে সামিট পুশ করা হবে। অর্থাৎ, সামিট পুশের দিন আমাদেরকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতা পাড়ি দিতে হবে। সেদিনই আজাউ ভ্যালিতে ফিরে এলে এলব্রুস পর্বতে প্রথম বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সুসম্পন্ন হবে। এই ছিল আমাদের পরিকল্পনা। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি কখনোই। অন্তত সামিট পুশের বেলায়। সে গল্পে আসছি।

আমরা ১৪ জুন ক্রুগাজর পর্যন্ত ঘুরে এসেই আরসেন ঝিনভ শারীরিকভাবে খানিকটা অসস্তিবোধ করতে থাকেন। ফলে নিজেকে তিনি অভিযান থেকে প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু আমাদের অভিযান চলতে লাগল।

পরদিন আমরা উচ্চতার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাওয়াতে প্রায় সাড়ে দশ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা ওয়েদার অবজার্ভেটরি টাওয়ারে গেলাম। এবার দলে যুক্ত হলেন রাশিয়ার উড়াল রিপাবলিকের অভিযাত্রী ভিক্টর পপভ এবং তার সহধর্মিনী এলিনা। প্রায় চার ঘণ্টা সময় হাইকিং করে যখন পৌঁছেছি ওয়েদার অবজার্ভেটরি টাওয়ারে, আবহাওয়া পূর্বাভাষ জানার স্থাপনা দেখে মনে হয়েছে যেন এক অসম্ভব সাধন করেছে রুশবাসী। আবহাওয়ার পূর্বাভাষ জানতে বড় বড় সরঞ্জাম কতো অনায়াসে তুলে ফেলেছে প্রায় ১০ হাজার ফুট উচ্চতায়।

১৬ জুন পূর্ণ বিশ্রাম। তবে এলব্রুস পর্বতের চূড়া জয়ের জন্য গারা বাসি বা সেকেন্ড ক্যাম্পে থাকাকালীন প্রয়োজনীয় খাবারদাবারসহ পর্বতারোহণের সব সরঞ্জাম সেদিনই যোগাড় করতে হবে। সেজন্য এক ফাঁকে ট্রেসকল ভিলেজে যেতে হবে সবাইকে। পর্বতারোহণ সরঞ্জামের জন্য প্রয়োজনীয় আইস বুট, ক্র্যাম্পন, হারনেস, ক্যারাবিনার ইত্যাদি অভিযাত্রীরা ঢাকার এভারেস্ট একাডেমি থেকেই সংগ্রহ করেছিলাম। তবে ওয়াকিং স্টিক, গ্লাভস, হ্যান্ড ওয়ার্মার, বালাক্লাভা ইত্যাদি যোগাড় করতে হয়েছিল ট্রেসকল ভিলেজে একটা ইকুইপমেন্ট শপ থেকে। কিন্তু খাবারদাবারসহ কিচেন আইটেম কেনাকাটার জন্য ডালহাতের তো কোনো আগ্রহ নেই! পরে আরসেনকে ফোন দিয়ে জানলামÑ আমাদের জন্য ‘কুক’ যেহেতু পরদিন আসবেন, তাই প্রয়োজনীয় রসদ পরদিন সকালেই কেনা হবে। কিন্তু তখন তো আবার গারা বাসিতে যাওয়ার তোড়জোড় থাকবে, তাহলে? নিজেকে এবার প্রবোধ দিলামÑ আসতে দাও আগে আগামীদিন।

১৭ জুন সকাল হলো। সকাল ৮টার দিকে আমরা প্রস্তুত হয়ে হোটেলের লবিতে নেমে এলাম। এদিন আর কিচেনে নেমে নাশতা তৈরি করে খাওয়া হলো না। তবে ট্রেসকল ভিলেজে একটা ডিপার্টমেন্ট শপে গিয়ে টাটকা পেটিস দিয়ে নাশতা সারা হলো। সঙ্গে থাকল ইয়োগার্ট। এখানেই আমাদের কুক ফাতিমার সঙ্গে পরিচয় হলো। তিনি যা যা প্রয়োজনÑ সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার সবই নিলেন। সঙ্গে বোতলজাত পানি নেয়া হলেও গারা বাসিতে বরফই ছিল পানির প্রধান উৎস। এক্ষেত্রে নিয়াজের পরামর্শটা ছিল বেশ কাজের। তিনি বলেছিলেন, গারা বাসিতে পৌঁছার চতুর্থ দিনেই আমরা এলব্রুস পর্বত জয়ের পরিকল্পনা করছি। কিন্তু যদি আবহাওয়া খারাপ থাকে, তাহলে? সেজন্য ছয় দিনের খাবার নিয়ে নেয়া ভালো। পর্বতারোহণে আসলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। এ সম্পর্কে আগে থেকে কোনো ধারণা করা যায় না। পর্বতে আবহাওয়ার পূর্বাভাষ বদলে যেতে সময় লাগে না। মানুষের শারীরিক সমস্যা তৈরি হওয়াটা মামুলি ব্যাপার। আর উপযুক্ত কাপড়চোপড় না থাকলে এবং টিমওয়ার্ক ভালো না হলে পর্বত জয় কখনোই সহজ বিষয় নয়। সুতরাং নিয়াজের চিন্তাটুকু মাথায় নিয়ে ছয় দিনের খাবার নেয়া হলো।

এবার হোটেলে ফিরে ব্যাগপ্যাক নিয়ে রওয়ানা দিলাম গারা বাসির দিকে। আজাউ ভ্যালি থেকে প্রথমে ক্যাবল কার, পরে ক্যাবল চেয়ারে করে গারা বাসি হাজির হয়েছি। অর্থাৎ বিনাশ্রমে প্রায় সাড়ে চার হাজার ফুট উচ্চতা পাড়ি দিয়েছি সবাই। সময় লেগেছে খুব বেশি হলে এক ঘণ্টা।

তবে ক্যাবল কার থেকে দ্বিতীয়বারে স্টেশন মির-এ নামার পরই মনে হলো যেন ফ্রিজের মধ্যে ঢুকে পড়েছি। এমন ঠাণ্ডা। সেখান থেকে প্রায় তিন হাজার ফুট উচ্চতা পার হয়ে গারা বাসি পৌঁছাতে পৌঁছাতে মনে হলো যেন হাড়ের মধ্যে গিয়ে ঠাণ্ডা ঢুকে পড়ছে। তাই দ্রুতই ঠাণ্ডা ঠেকানোর প্রস্তুতি নেয়া হলো।

কিন্তু এক দিনেই সাড়ে চার হাজার ফুট উচ্চতা দ্রুততম সময়ে পার হওয়ার ফলে উচ্চতাজনিত সমস্যা আক্রমণ করতে পারে, এই চিন্তায় সবাই সেদিনই ১২ হাজার ফুট উচ্চতার গারা বাসি থেকে ১৩ হাজার একশ বিশ ফুট উচ্চতার প্রিউট ইলেভেন-এ যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। সঙ্গে থাকলেন ডালহাত ওলমেঝভ। সেদিন গারা বাসিতে রাত কাটিয়ে ১৮ জুন প্রায় ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ‘পার্স্তুহভ রক’ পর্যন্ত গিয়ে ঘুরে এসেছি।

এর পরের দিন বিশ্রাম। তবে ২০ জুন গারা বাসি থেকে সামিট পুশ করার কথা থাকলেও আবহাওয়া খারাপ থাকায় তা বদলে ২২ জুন ঠিক করা হয়। এদিন ভোররাত ৩টায় গারা বাসি থেকে সামিট পুশ করা হলেও প্রায় ৫৫ কিলোমিটার বেগে তুষারঝড় শুরু হওয়ায় ১৬ হাজার চারশ ফুট উচ্চতা থেকে মাইনাস পনেরো ডিগ্রি তাপমাত্রায় অভিযাত্রীদের নিরাপত্তার কারণে সেদিনের মতো অভিযান বাতিল করা হয়েছিলো।

আবহাওয়ার পূর্বাভাষ দেখে ২৬ জুন নতুন করে সামিট পুশের পরিকল্পনা করা হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে গারা বাসি থেকে রাত সোয়া তিনটায় আমরা সামিট পুশ শুরু করেছি। ভোর সাতটার দিকে প্রায় ১৭ হাজার চারশ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত সেদলেভিনায় পৌঁছানোর পর ফের তুষারঝড় শুরু হয়। এর মধ্যেই সেদলেভিনায় খানিকটা বিশ্রামের পর আবার চূড়ার দিকে যাত্রা করেছি।

একটানা পর্বতারোহণ শেষে সকাল আটটা চল্লিশ মিনিটে ককেশাস পর্বতমালার সর্বোচ্চ চূড়া এলব্রুস পর্বতের ১৮ হাজার ৫শ দশ ফুট উঁচু ওয়েস্টার্ন সামিট জয় করলাম।

এসময় এলব্রুস পর্বতে প্রথম বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী অভিযানের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পতাকা এবং কাবারডিনো বলকারিয়া রিপাবলিকের পতাকা ওড়ালাম। সেই জয়ের গুরুত্বও যেমন অন্যরকম, তেমনি এর তৃপ্তিটাও অসামান্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৩
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি-ichchheghuri@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।