ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

শিশুদের রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখবেন না

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৩
শিশুদের রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখবেন না

ঢাবি: নেতা- নেত্রী বা ভিআইপিকে সংবর্ধনা দিতে রাস্তার পাশে ফুল হাতে শিশুদের দাঁড় করিয়ে রাখা খুবই ঘৃণ্য কাজ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিরা শিশুদের হর্তাকর্তা নয়।

তারা শিশুদের সেবক। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তার পাশে শিশুদের দাঁড় করিয়ে রাখার অধিকার কারো নেই।

শুক্রবার দুপুরে বাংলা একাডেমী’র আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘৪র্থ শিশুতোষ চলচ্চিত্র ও অনুষ্ঠান নির্মাণ কর্মশালা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আজকাল শিশুদের ব্যবহার করা  হচ্ছে। মৌলবাদীরা বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ডে শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।

অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দয়া করে শিশুর বয়স আঠার বছর পূর্ণ না হওয়ার আগে তাদেরকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করবেন না।

আজকাল মাদক পাচারেও শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে । যা একটি সৃজনশীল জাতি গঠনের প্রধান অন্তরায়।

শিশুদের বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ প্রদান করতে গণমাধ্যমে তাদের জন্য আলাদা স্থান করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,  আমাদের দেশে শিশুতোষ অনুষ্ঠানকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

তাই বিটিভি সহ প্রতিটি গণমাধ্যমের উচিত শিশুদের জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ রেখে বিভিন্ন শিশুতোষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা। পত্রিকাগুলোও যেন শিশুদের জন্য বিশেষ পাতা বরাদ্দ রাখে।

এ বিষয়ে তিনি প্রতিটি গণমাধ্যমকে অনুরোধ করবেন বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।

শিশুদের সঠিক বিকাশে অভিভাবকসহ সবাইকে ভ‍ূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ইনু বলেন, আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।

তাই তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তাদের চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে।

শিশুদের সুস্থ, সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিদিন সকালে উঠে তোমাদের অন্তত একটি ভালো কাজ করার শপথ নিতে হবে। ছেলে-মেয়ে আলাদা না করে

সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে। তোমাদের চিনতে হবে কে ভালো কে খারাপ। স্বাধীনতা বিরোধীদের ঘৃণার চোখে দেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের

গড়ে তুলতে হবে। তোমাদের সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডে পথশিশুসহ প্রতিটি অসহায় শিশুর কথা মাথায় রাখতে হবে। তোমাদের কাজে তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।

এ সময় শিশুদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন শিক্ষামূলক বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি ডোরেমন না দেখে মিনা কার্টুন দেখার পরামর্শ দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তরিক-উল-ইসলাম বলেন,  শিশুরা তাদের মেধা ও সৃষ্টিশীলতা দিয়ে যে চলচ্চিত্র আজ নির্মাণ করেছে তাতে তারাই যে একদিন বাংলা চলচ্চিত্রের দিকপাল হবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে শিশুদের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় নির্মিত ৩টি স্বল্পদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।

তিনটি চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘আমাদের মতিউর’ নামে একটি তথ্যচিত্র রয়েছে । যার ব্যাপ্তিকাল ১৮ মিনিট। অন্যদু’টি কাহিনী চিত্র । ‘পম্পি নামের ছেলেটি’ ও ‘অটুট স্বপ্ন’ নামের কাহিনীচিত্র দু’টির ব্যাপ্তিকাল ২০ মিনিট করে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ২০০৮ সাল থেকে শিশুদের সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ডে উৎসাহ প্রদানের জন্য সরাসরি শিশুদের পরিকল্পনা  ও পরিচালনায়

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ শুরু করে। শিশুরা এখানে নির্দিষ্ট কর্মশালার মাধ্যমে তাদের মুক্তচিন্তা ও অনুভূতিগুলো প্রকাশের সুযোগ পেয়ে থাকে। একইভাবে হাতে কলমে কাজ করতে গিয়ে ক্যামেরা পরিচালনার ক্ষেত্রেও দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল আহাদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭ ,২০১৩
 এসএ/জেডএস/আরআই/এমজেডআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।