ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

জাতির বিবেকের স্মৃতি ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ’

আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৩
জাতির বিবেকের স্মৃতি ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ’

ঢাকা: বুদ্ধিজীবীদের বলা হয় জাতির বিবেক। একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, শক্তিশালী, মননশীল জাতি গড়ার কারিগর তারা।

একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশি আলবদর, আলশামস, রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় হত্যা করেছিল বুদ্ধিজীবীদের।

তাদের মধ্যে ছিলেন, শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিল্পী, আইনজীবী প্রমুখ।

পাকিস্তানি দোসরা বুঝেছিল বাঙালিকে জাতিকে পঙ্গু করতে হলে জাতির এই বিবেকদের হত্যা করতে হবে। তাই ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারা চালিয়েছিল ইতিহাসের অন্যতম নারকীয় হত্যাকাণ্ড। বাঙালি জাতি হারিয়েছিল তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

জাতি সেদিন হারিয়েছিল আনোয়ার পাশা, জাহির রায়হান, শহীদুল্লা কায়সার, মুনীর চৌধুরী, আলতাফ মাহমুদ, গোবিন্দ চন্দ্র দেব, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আব্দুল জব্বার, সেলিনা পারভীন, সিরাজুদ্দীন হোসেন সহ আরও অনেক গুণী মানুষকে।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দু’দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দোসর- রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্যদের হাতে অপহৃত হন অনেক বুদ্ধিজীবী। পরে তাদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।  

বাংলাদেশি এসব বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে মিরপুর ‘রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ’। স্মৃতিসৌধটির স্থপতি মোস্তফা হালি কুদ্দুস। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, রাজাকার ও আল-বদর বাহিনীর সহায়তায় বাংলাদেশের বহুসংখ্যক বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে তাদেরকে মিরপুর এলাকায় ফেলে রাখে। সেসব বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এই স্থানে নির্মিত হয় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।

১৯৯৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর শেষ হয় এটির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। ৩ দশমিক ১৫ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে সৌধটি। আর এটি নির্মাণ করেছেন দুই স্থপতি ফরিদউদ্দিন আহমেদ ও মোহাম্মদ জামি আল শাফি।

প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর পালন করা হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দেশের অসংখ্য মানুষ এদিন স্মৃতিসৌধে হাজির হন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করতে, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে।

এই বীর সন্তানদের হত্যার দায়ে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইতোমধ্যে চৌধুরী মাঈনুদ্দিন, আশরাফুজ্জামান খান, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এছাড়া আরেক অভিযুক্ত জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর রায় এখনো হয়নি। এ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত রয়েছেন আরও অনেক যুদ্ধাপরাধী।

আর যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি এখন শুধু কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায়। বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম প্রাণভরে চায় দেশের মাটিতে এসব নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক। একই সঙ্গে কার্যকর হোক দণ্ডিতদের রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।