ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রাজাকারদের ঘৃণা জানাতে ভাস্কর্য ‘ঘৃণিত রাজাকার’

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৩
রাজাকারদের ঘৃণা জানাতে ভাস্কর্য ‘ঘৃণিত রাজাকার’

ঢাকা: পাকিস্তানিদের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশ পেয়েছিল তার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। আর যুদ্ধে পাকিস্তানিদের সাহায্য, সহযোগিতা করেছিল মনের ভিতর পাকিস্তানের স্বপ্ন লালন করা এদেশী কিছু মানুষ, যাদের আমরা বলি রাজাকার, আলবদর, আলশামস।



নতুন প্রজন্ম এই রাজাকারদের হত্যা, ধর্ষণ, অমানসিক নির্যাতন দেখেনি, শুনেছে। জাতির সবচেয়ে ঘৃণার পাত্র তারাই। তাই পুরনোদের সঙ্গে যেন নতুন প্রজন্মও রাজাকারদের ঘৃণা জানাতে পারে সেজন্য কুষ্টিয়ায় নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম ভাস্কর্য ‘ঘৃণিত রাজাকার’।

জামায়াত নেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আবদুল কাদের মোল্লা, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আব্দুল আলীমসহ সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরও বেগবান করতে ২০০৯ সালে কুষ্টিয়ায় নির্মিত হয় ভাস্কর্য ঘৃণিত রাজাকার।

কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেটে স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়েছে এই ঘৃণিত রাজাকার চত্বর। চত্বরে নির্মিত রাজাকারের ভাস্কর্যটি ২৫ ফুট লম্বা।

ঘৃণিত রাজাকারের এ ভাস্কর্যে পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে ১৭ এপ্রিল ২০০৯ সালে চত্বরের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত।
 
রাজাকারের এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছন শিল্পী ইতি খান। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে এসে ঘৃণিত এই রাজাকার ভাস্কর্যে পাথর নিক্ষেপ করে তাদের ঘৃণা প্রকাশ করবে-এমনটিই তার আশা।

ভাস্কর্যে তিনি রাজাকারদের রক্তাক্ত লোলুপ জিহ্বার পাশাপাশি হৃদয়ে পাকিস্তানি মনোভাব অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ততদিন বংশ পরম্পরায় এই অভিশপ্ত রাজাকারদের প্রতি এদেশের মানুষের ঘৃণা ও ধিক্কার অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজাকারদের ঘৃণ্য চরিত্রটি নানাভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তাই রাজাকারদের প্রতি স্থায়ীভাবে ঘৃণা প্রদর্শনে কুষ্টিয়া শহরের প্রবেশপথে নির্মিত হয় `ঘৃণিত রাজাকার` ভাস্কর্য।

কুষ্টিয়ার ভাস্কর ইতি খানের ডিজাইন ও তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই অভিনব ভাস্কর্যটি ইতোমধ্যে কুষ্টিয়াসহ বাংলাদেশের নানা অঞ্চলের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও সক্রিয় ঘৃণিত এই রাজাকার চক্র।

একাত্তরে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের সঙ্গে জড়িত সেদিনের সেই সব নরপশুর অনেকেই এখনও জীবিত। ভাস্কর ইতি খান কুষ্টিয়ায় `রাজাকার ভাস্কর্য` স্থাপনের মধ্য দিয়ে জাতির প্রতি মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্বাধীনতাযুদ্ধে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার বিশাল অবদানের কথা আমাদের সবারই জানা। ঘৃণিত রাজাকার ভাস্কর্যটি স্থাপন করে কুষ্টিয়াবাসী দেশবাসীকে নতুনভাবে এই চক্রের বিরুদ্ধে জেগে ওঠার অনুপ্রেরণা যোগায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।