ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

শুভ হোক তোমার জন্মদিন

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৪
শুভ হোক তোমার জন্মদিন

নেলসন ম্যান্ডেলা। আমাদের অতি পরিচিত একটি নাম।

আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী এই নেতা মানুষের হৃদয়ে আছেন, থাকবেন সবসময়।

১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার ছোট্ট গ্রাম মভেজোতে তার জন্ম। আজ এ অবিসংবাদিত নেতার জন্মদিন।

২০০৯ সাল থেকে জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী এ দিনটি পালিত হচ্ছে ম্যান্ডেলা দিবস হিসেবে।

ম্যান্ডেলার জন্ম আফ্রিকার থেম্বু রাজবংশের ক্যাডেট শাখায়। তার বাবা গাদলা হেনরি মপাকানইসা এবং মা নেসোকেনি ফ্যানি। ম্যান্ডেলার মা ছিলেন তার বাবার তৃতীয় স্ত্রী। ছোটবেলায় ম্যান্ডেলার ডাকনাম ছিল রোহিহ্লাহ্লা।  

মায়ের সঙ্গে কুনু গ্রামে কেটেছে ম্যান্ডেলার ছোটবেলা। সেখানেই তিন বোনের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন তিনি। সেখানে রাখালবালকের কাজ করেছেন তিনি। সেজন্য অন্য ছেলেদের সঙ্গে অনেকটা সময় বাইরে কাটাতেন।

ম্যান্ডেলার বাবা-মা কেউ লেখাপড়া জানতেন না। তবে ম্যান্ডেলার বয়স যখন সাত, তখন তার মা তাকে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করেছিলেন। পরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে স্কুলে পড়েছেন ম্যান্ডেলা। স্কুলে প্রথম দিনে শিক্ষিকা প্রত্যেক ছাত্রকে একটি করে ইংরেজি নাম দিয়েছিলেন। তখনই ম্যান্ডেলার নাম রাখা হয়েছিল নেলসন।

নেলসন ম্যান্ডেলার বয়স যখন নয় বছর, তখন তার বাবা তাদের সঙ্গে কুনুতে থাকতে আসেন। এরপর তিনি অজানা এক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরবর্তীতে ম্যান্ডেলা বলেছেন, তার ধারণা তার বাবা ফুসফুসের কোনো রোগে ভুগছিলেন।

এরপর ম্যান্ডেলাকে তার মা মখেকেজউইনির প্রাসাদ ‘গ্রেট প্লেস’-এ নিয়ে যান। সেখানে থেম্বু রিজেন্ট চিফ জোগিন্তাবা দালিন্দয়েবোর কাছে রেখে আসা হয়। সেখানে যাওয়ার পর অনেক বছর মাকে দেখেন নি ম্যান্ডেলা। কিন্তু জোগিন্তাবা এবং তার স্ত্রী ম্যান্ডেলাকে বাবা-মায়ের স্নেহ দিয়েই বড় করছিলেন। তাদের দুই সন্তান জাস্টিস ও নোমাফুর সঙ্গে বেড়ে উঠছিলেন ম্যান্ডেলা।

প্রতি রবিবার অভিভাবকদের সঙ্গে গির্জায় যেতেন বলে খ্রিষ্টধর্ম ম্যান্ডেলার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে। প্রাসাদের কাছেই একটি মেথডিস্ট মিশন স্কুলে ইংরেজি, ভূগোল, ঝোসা এবং ইতিহাস শিখতেন ম্যান্ডেলা। প্রাসাদে আসা মানুষদের কাছে বিভিন্ন গল্প শুনে আফ্রিকার ইতিহাসের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ম্যান্ডেলার। ক্লার্কবারি বোর্ডিং ইনস্টিটিউটে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন নেলসন।

মাত্র দু’বছরেই জুনিয়র সার্টিফিকেট সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৩৭ সালে হিয়েল্ডটাউনে মেথডলিস্ট কলেজে পড়তে যান তিনি। ইউনিভার্সিটি অভ ফোর্ট হেয়ারে বিএ ডিগ্রি নেওয়ার কাজ শুরু করেন ম্যান্ডেলা। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন এবং ডিগ্রি না নিয়েই ফিরে আসেন।

এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ম্যান্ডেলা। আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ১৯৫২ সালের অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। বর্ণবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুধু নয়, গেরিলা যুদ্ধের পরিকল্পনাও করেন তিনি। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদ্রোহিতাসহ নানা কারণে তাকে কারাবরণ করতে হয়। দীর্ঘ ২৭ বছর কারাগারে থাকার সময়ে ম্যান্ডেলার জনপ্রিয়তা বাড়ে। তিনি আফ্রিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বর্ণবাদবিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান ম্যান্ডেলা।

ম্যান্ডেলা শান্তিতে নোবেলসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।