ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ক্ষুদে আঁকিয়েদের বৈশাখবরণ

আমিরুল মাসুদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১১
ক্ষুদে আঁকিয়েদের বৈশাখবরণ

ঢাকা : এখানে কালবোশেখী ঝড়ে নুয়ে পড়েছে গাছপালা, ওখানে তালের হাতপাখায় গা জুড়াচ্ছে গাঁয়ের বধূ, অদূরেই বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে আম কুড়াচ্ছে খোকাখুকি- বলতে হয় না এসবই বৈশাখের দৃশ্য।

আধুনিকতার ছোঁয়া আর শহুরে যান্ত্রিক জীবনের টানাহেঁচড়ায় বাঙালির জীবন থেকে মুছে যাচ্ছে এসব দৃশ্য।

তারপরেও বাবা-মা কিংবা দাদী-নানীর মুখে শুনে শুনে শিশুরা মনের কোণে পুষে গ্রাম-বাংলার চিত্র। বৈশাখকে বরণ করতে এসে এসব বৈশিষ্ট্যই তুলে ধরেছে ক্ষুদে আঁকিয়েরা।

আয়োজনটি ছিলো ঢাকাবাসীর। শনিবার বিকেলে। ‘এলিট মেহেদী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা’ নামে।  

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী লালবাগের কেল্লায় আয়োজিত এ ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা।

কল্পনাশক্তি দিয়ে আঁকা তাদের চিত্রকর্মে ফুটে ওঠে বৈশাখ মাসে বাঙালির আটপৌঢ়ে জীবন।  

লাল, নীল, হলুদ, বেগুনী এমন হরেক রংয়ে রঙিন প্রতিটি ক্যানভাসে ভেসে উঠেছে বৈশাখের প্রকৃতি সমাজ।  

ছবি আকঁতে আকঁতে ক্যানভাসের রং ছড়িয়েছে তাদের গালে হাতে। সুন্দর কাপড়ে। এত রঙের ছড়াছড়িতে সমস্ত লালবাগের কেল্লা হয়ে উঠেছিলো রঙের জগত।

তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ফারজানা মজুমদার তার আঁকা গৃহবধুর চোখে কাজল লাগাতে লাগাতে বাংলানিউজকে জানালো মায়ের সাথে এসেছে, আর মায়ের মুখে শোনা গল্প থেকেই এ ছবি।

একদিন বড় শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন ফারজানার।

পঞ্চম শ্রেণীর মুশফিকুর শুধু গান আর পানতা ভাতের মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখবরণ শেষ না করে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় আসতে পেরে খুশি।

প্রতিযোগিতায় মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন শারমিন আক্তার। শহুরে ব্যস্ততার পাশে এমন কর্মসূচিতে অংশ নিলে বিনোদন পাওয়া যায়। আর সন্তানের দক্ষতা ও জানার পরিসর বাড়ে, বললেন তিনি।

চিত্রকর্ম পরিদর্শনকালে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন। এত অল্প বয়সে রং-তুলিতে তুলে ধরা বৈশাখের এমন চিত্র  দেখে বিস্মিত হয়েছেন বলেই জানালেন। তিনি বলেন, ‘শুধু পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে শিশুদের এমন শিল্প সংস্কৃতিচর্চার সুযোগ করে দেওয়া হলে তা তাদের মধ্যে বেশি আগ্রহ ও উৎসাহ তৈরি করবে।

প্রতিযোগিতার আয়োজনের জন্য ঢাকাবাসী সংগঠনের প্রতিও ধন্যবাদ জানান তিনি।

এলিট কসমেটিক্সের এমডি মো: মনোয়ার হোসেন ছিলেন উপস্থিত। বাঙালির ঐতিহ্যের প্রচার ঘটাতে শুধু ঢাকাতেই নয় সারা বংলাদেশে এরকম প্রতিযোগিতা আয়োজন দরকার বলে অভিমত তার।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজক ঢাকাবাসীর সভাপতি শুকুর সালেক বলেন ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাঙালি ঐতিহ্যের চর্চা ও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করার মত সংগঠনের সংখ্যা খুবই কম। তাই নতুন প্রজন্ম বঞ্চিত হচ্ছে তাদের ঐতিহ্যের চর্চার অধিকার থেকে। ’

এসময় তিনি মূলত নতুন প্রজন্মেকে শুধু পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান নয় বরং পুরো বৈশাখের আবহ ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানানোর উদ্দেশ্যে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান।

পরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এলিট কসমেটিক্সের পক্ষ থেকে গিফটবক্স।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫,এপ্রিল ১৬,২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।