ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

কুলসুমের লাল-নীল স্বপ্ন

গোফরান পলাশ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১১
কুলসুমের লাল-নীল স্বপ্ন

মোর লেহাপড়া করতে ইচ্ছা করে! কিন্তু একলা একলা তো স্কুলে যাওন যায় না। হেইয়ার লাইগ্যা আমারে এ্যাত্তদিন স্কুলে ভর্তি করে নায়।

আমি লেহাপড়া কইর‌্যা চাকরি করতে চাই। আমি পড়তে চাই আমনেরা মায়রে একটু বুঝান এ কথা বলেই কেঁদে ফেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী কুলসুম আক্তার সাদিয়া (১৩)।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামের দিনমজুর শহিদুল আলমের চার সন্তানের মধ্যে কুলসুম তৃতীয়। সংসারে অসচ্ছলতার কারণে এ পরিবারে কেউই বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে পারেনি। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও কুলসুমের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ সমস্যায় ফেলেছে পরিবারকে। মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহের কারণে নিজের দিনমজুরির কাজ রেখে মা রাশিদা বেগম চার কিলোমিটার মেঠো পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন কুলসুমকে স্কুলে আনা নেয়া করেন।

টিয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাদুরতলী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী কুলসুম। এ বয়সে তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার কথা থাকলেও দারিদ্র্যতা ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে এখনও শিশু করে রেখেছে।

মেয়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাশিদা বেগম বলেন, ‘মাইয়াডা খালি স্কুলে আইতে চায়। এ্যাত্তবড়ো মাইয়া কোলে লইয়া যাইতে হয়। স্কুলে না নিলে বইয়া বইয়া খালি কান্দে। তাই কাজ ছাইড়া ওরে স্কুলে ভর্তি করছি। ’

কুলসুমের স্কুলের শিক্ষিকা মাকসুদা পারভীন বলেন, কুলসুম লেখাপড়ায় সবার চেয়ে ভালো। নিয়মিত স্কুলে আসতে না পারলেও বইয়ের যেখান থেকে পড়া জিজ্ঞাসা করি ও তা বলতে পারে। ওর যদি একটি হুইল চেয়ার থাকতো তাহলে হয়তো প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে পারতো।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।