ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

আমার ইসকুল

মুকসুদপুর এসজে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

শরীফুল রোমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১১
মুকসুদপুর এসজে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

স্কুল সংলগ্ন বেইলি ব্রিজ হওয়ার কারণে মেইন রোডে প্রতিদিনই বাস-ট্রাক-ভ্যানজট সৃষ্টি হয়। এসব জটলা ভেঙ্গে স্কুল গেটের ভেতরে যেতে ছাত্র/ছাত্রীদের পোহাতে হয়ঝক্কি-ঝামেলা।

মেইন রোডের পাশে বিভিন্ন দোকান, স’মিল ও রেজিস্ট্রি অফিস থাকায় হট্টগোলও বেশি। তবে বাইরের পরিবেশটা কোলাহলপূর্ণ হলেও স্কুলের পরিবেশ শান্ত ও নিরিবিলি।

১৯২৮ সালের ১৭ জুলাই স্থাপিত হয়ে ১৯৪৬ সালের ২২ মার্চ প্রথম স্বীকৃতি পায় মুকসুদপুর এসজে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ। বর্তমানে এ স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা এক হাজারের বেশি। ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা বেশি হলেও স্কুল চলে এক শিফটে।

কী আছে?
এ স্কুলের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন বর্তমানে ৫টি। এর মধ্যে  ১টি দ্বিতল ভবন, ১টি টিনসেড ভবন ও ৩টি একতলা বিশিষ্ট ভবন রয়েছে। রয়েছে কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগার ও নামাজের কক্ষ।

সম্ভাবনা
একটি সুশৃঙ্খল বিদ্যাপীঠ হিসেবে এ স্কুলের সুনাম রয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও বেশ এগিয়ে। আন্ত:স্কুল প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে প্রতিবছরই বিদ্যালয়ের গৌঁরব বয়ে আনছে। সৃজনশীল কাজে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশের জন্যে গঠন করা হয়েছে স্কাউট দল।

বিদ্যালয়ের সিনিয়র ক্রীড়া শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, সৃজনশীল কাজে ছাত্র-ছাত্রীরা পারদর্শিতার পরিচয় দিচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চেতনা জাগ্রত করার জন্যে প্রতিবছর বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয় বার্ষিক ক্রীড়া ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। জাতীয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। ডিবেট ও আবৃত্তিতে ছাত্র-ছাত্রীরা ভাল করলেও এখানে নেই কোন ডিবেটিং ক্লাব ও আবৃত্তি দল। স্কুলের প্রাইমারী বৃত্তি, জুনিয়র বৃত্তি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক। এখানে চালু আছে দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অর্ধবৈতনিক ও অবৈতনিক শিক্ষা।

সমস্যা
বর্তমানে বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত। রয়েছে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক স্বল্পতা। টয়লেট ব্যবহারের সমস্যাকেই শিক্ষার্থীরা প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ৮ম শ্রেণীর ছাত্র শাহআলম জানায়, টয়লেটগুলো ঠিকমতো পরিস্কার করা হয় না। নোংরা-অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে। আর এতো দূর্গন্ধ থাকে যে ব্যবহার করা যায় না। ৮ম শ্রেণীর আরেক ছাত্র অর্নব কুমার অন্তর জানায়, খেলার সরঞ্জাম থাকলেও ব্যবহার করতে দেয়া হয় না।

বিদ্যালয়ের পূর্বদিকের ভবনের মাত্র কয়েক গজ দূরে বেইলি ব্রিজ থাকার কারণে গাড়ি ওঠা নামার শব্দে শিক্ষার্থীদের শব্দ দূষনের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত। যা শিক্ষার্থীদের শ্রবণ শক্তির জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। পশ্চিম পার্শ্বের টিনসেড ভবনের পাশে একটি মজা পুকুর ও এর আশেপাশে হোটেল-রেস্তোরার ময়লা-আর্বজনা ও উচ্ছিষ্ট খাবারের দূর্গন্ধে ক্লাস করতে অসুবিধা হয়। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই গ্রন্থাগার থাকা জরুরি।

এই স্কুলেও রয়েছে একটি লাইব্রেরি। কিন্তু লাইব্রেরির ওয়ার্ক চালু না থাকায় বইগুলো শিক্ষার্থীদের কোন উপকারে আসছে না। সেগুলো আলমিরাতে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। স্কুল শুরু ও ছুটির সময় স্কুলের সামনের রাস্তায় উঠতি বয়সের তরুণদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের দাবি
শ্রেণী-ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা হোক। বিদ্যুৎ সংকটে জেনারেটর চাই। সমৃদ্ধ লাইব্রেরি চাই। সাইকেল স্টান্ড চাই।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।