ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ঠগ ও কাচের মানুষ | বিএম বরকতউল্লাহ

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
ঠগ ও কাচের মানুষ | বিএম বরকতউল্লাহ প্রতীকী ছবি

ভোরবিহানে মনুর মা বদনা হাতে বাইরে গেলো। আর ঘরে ফেরার নাম নেই। মনুর বাপ মনুর মাকে ডাকতে ডাকতে বাইরে গিয়ে দেখে, মনুর মা বদনা হাতে তালগাছের গোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। কথাও বলছে না, নড়ছেও না! কোনো সাড়া না পেয়ে মনুর বাপ এগিয়ে গিয়ে মনুর মার হাত ধরে টান দিতেই মনুর মা মাটিতে পড়ে কাচের মতো ভেঙে চুরমার হয়ে গেলো।

মনুর বাপ ভাঙাচোরা মনুর মায়ের দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে গেলো!
 
এমনই একটা কাহিনি মুহূর্তে ছড়িয়ে গেলো গ্রামে।  
কাহিনীর হাত-পা গজাতে লাগলো।

যে-ই শুনছে সে-ই পাগলের মতো হা হা করে ছুটে আসছে। গাঁয়ের মানুষ হনহন করে এসে ভিড় করেছে মনুদের তালতলায়। কেউ দরজার ডালা লাগিয়ে, কেউ না লাগিয়ে, কেউ জিন এটে ছুটে এসেছে এখানে।

এরা এসে ভয়ে-কৌতূহলে বলাবলি করছে, এমন আজব ঘটনা তো জীবনেও শুনিনি!  

কোত্থেকে জানি কয়েকজন সঙ্গীসহ মস্তবড় এক ওঝা হনহন করে চলে এলো এখানে। ওরা এসেই বললো, এগুলান মহা পাঁজি ভূতের কাম। এখনই ওদের কোমর ভাঙতে না পারলে এ গ্রামের যার-তার ওপর ‘আছর-আবদার’ করে সাংঘাতিক ফ্যাসাদে ফেলে দিতে পারে। ছেলে-বুড়ো কেউই নিরাপদ না। এদের কবলে পড়লে আর দিশা-মিশা পাবে না কেউ! তয় আসল চিকিৎসা শুরু করলে আপছে-আপ সেরে যাবে সব।  

ভাঙা মনুর মা উঠে দাঁড়াবে, মনুর বাপ ফিরে এসে হাসি দিয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে ঘরে চলে যাবে। তয় সালাম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুদ্ধভাবে জবাবে বলবেন, ওয়ালাইকুমাস সালাম। সালামে ও আদব-লেহাজে হের-ফের হলে কিন্তু খবর আছে! পরে সে সবাইকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন ছুড়ে মারল, ‘কী পারবেন না?’ ছোট-বড় সবাই বলল, ‘হ হ পারবো। ’

‘তাহলে কি শুরু করবো ভয়ঙ্কর পাঁজি ভূতের চিকিৎসা?’ সবাই সমস্বরে শুরু করেন, ‘শুরু করেন, শুরু করেন,’ বলে ওঝাকে ভূতের চিকিৎসা করার অনুমতি দিল। কয়েকজন ফিসফিস করে বললো, ‘ওঝা একখান!’

চলবে…

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।