ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

একাত্তরে রণাঙ্গণের শিশু কিশোর

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১১
একাত্তরে রণাঙ্গণের শিশু কিশোর

স্বাধীনতা বাংলা ও বাঙালির গর্ব। ১৯৭১ সালের দীর্ঘ নয় মাসের রক্তাক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জন করেছে এই মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।



৭১’র মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা যেমন অবদান রেখেছেন, তেমনি অবদান রেখেছে এদেশের শিশু-কিশোররা, যারা মুক্তিযুদ্ধের সাথে কোনো না কোনোভাবে জড়িত ছিল। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখই ছিল শিশু-কিশোর। আর যে সব নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ছিল কিশোরী।

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে বড়দের সঙ্গে মাঠে নেমেছিল শিশুরাও।

রাতের আঁধারে অথবা প্রয়োজনীয় যে কোনো মুহূর্তে এক ক্যাম্পের খবর অন্য ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়েছে তোমাদের মতো শিশুরা। তারা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে খাবার সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়েছে। বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্তচর হয়ে পাকিস্তানি শিবিরে ঢুকে সংবাদ বা যে কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য মুক্তিযোদ্ধাদের জানিয়েছে, পাকিস্তানি হানাদারদের ভুল রাস্তা দেখিয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদের তত্ত্বাবধান করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে থেকে গোলাবারুদ ও অস্ত্র সরবরাহ করাসহ যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে বেড়ানোসহ মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যান্য ছোট খাটো কাজ করেছে শিশু-কিশোররা।

শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে ওরা যুদ্ধের জন্য অস্ত্রও ধরেছে।

যুদ্ধ শেষে স্বাধীনতার আনন্দ মিছিল ও উৎসবেও ছিল বাংলার শিশুদের অভূতপূর্ব অংশগ্রহন।

মুক্তিযুদ্ধ বিয়ষক বিভিন্ন আলোকচিত্র এবং ভিডিওতে শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের চিত্র তোমরা নিশ্চয়ই দেখেছ।

চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’, তারেক মাসুদ পরিচালিত ‘মুক্তির গান’ এবং মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ চলচ্চিত্রে তোমরা দেখতে পেয়েছ মুক্তিযুদ্ধে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণের চিত্র। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস ও নাটকের মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবেই বর্তমানে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণের কথা।

আরেকটি কথা না বললেই নয়। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছেন, তাদের কাছে দাবি, শিশু মুক্তিযোদ্ধাদের অসামান্য অবদানের কথাও সবাইকে জানাতে হবে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।