ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ডোরেমন

আসাদুল হক খোকন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১২
ডোরেমন

কার্টুন প্রায় সব শিশুর কাছেই প্রিয়। আমি নিজেও কোনো কোনো কার্টুনের ভক্ত।

যেমন- টম অ্যান্ড জেরি!

একটা সময় ‘টম অ্যান্ড জেরি’ ছিল শিশুদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশসহ বাংলাদেশের শিশুদের কাছেও ফেভারিট কার্টুন। আর এখন ডোরেমন। তার মানে, কার্টুন জগতে এখন ডোরেমনের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় সিরিয়াল খুব কমই আছে।

চলো এবার তোমাদের  মনোজগতের মডেল কল্প-চরিত্র ডোরেমন সম্পর্কে বেশ কিছু মজার তথ্য জেনে নেয়া যাক।

আচ্ছা, ডোরেমন দেখতে দেখতে কি তোমাদের মনে কখনো এই প্রশ্ন জাগেনি, এই ডোরেমন কার্টুনের স্রষ্টা কে? কবে? কিভাবে? এমন সুন্দর এই কার্টুনের জন্ম হলো?

নিশ্চয় জেগেছিলো। কিন্তু কেউ হয়তো তোমাদের এই মূল্যবান তথ্যগুলো জানায়নি।

আসলে, হিরোশি ফুজিমোতো এবং মোতো আবিকো নামের জাপানী ২ জন কার্টুনিস্টের মেধা ও কল্পনার ফসল এই ডোরেমন।

১৯৫৪ সালে তারা দু’জনে ‘ফুজিকো ফুজিয়ো’ নামে জুটি বাঁধেন। আর দু’জন মিলে একসঙ্গে আঁকাআঁকি করেন ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ কার্টুন আঁকার জন্য দু’জন মিলে একটা ছোট্ট দল গঠন করেন এবং এর নাম দেন ‘ফুজিকো ফুজিয়ো’।

তোমাদের প্রিয় কার্টুন ডোরেমন যে এ দু’জন কার্টুনিস্টের হাতেই জন্মেছিলো সেটি  নিশ্চিত করে বলা যায়। কিন্তু কবে জন্মেছিলো, এমন প্রশ্নের উত্তর ফুজিকো ফুজিয়ো কখনোই বলেননি।

তবে প্রথম ডোরেমন কার্টুনটি বের হয় ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বরে, এক সাথে জাপানের ছয়টি ম্যাগাজিনে!

এক সাথে ছয়টি ম্যাগাজিনে কেন?

কারণ, জাপানে আলাদা আলাদা ক্লাসের শিশুদের জন্য বের হয় সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন ম্যাগাজিন। এরকম ছয়টি ক্লাসের ম্যাগাজিনে একসঙ্গে ছাপা শুরু হয় ডোরেমন।

ডোরেমনের জনকরা এক সময় আলাদা হয়ে যান। তারপরও কিন্তু তাঁরা কার্টুন আঁকাআঁকি ছেড়ে দেননি। আবিকো এখনো ফুজিকো ফুজিয়ো নামেই আঁকেন। আর ফুজিমোতো আঁকতেন ফুজিকো এফ ফুজিয়ো নামে। আঁকতেন বলছি এজন্য যে, ১৯৬৯ সালে ফুজিমোতো মারা গেছেন।

ডোরেমন সম্পর্কে তোমাদের একটা মজার তথ্য দেই। ডোরেমন নামটার শেষের অংশটা, মানে ‘ইমন’ কিন্তু জাপানের ছেলেদের একটা জনপ্রিয় নাম। আগে অনেকেই তাদের ছেলেদের নামের শেষে ইমন লাগিয়ে নিতো। ধরো কেউ হয়তো তাদের ছেলের নাম রাখলো জো। তার শেষে ইমন লাগিয়ে সেটাকে করে ফেললো- জোয়েমন।
 
আচ্ছা, তোমরা কি জানো ডোরেমন মানে কী? ডোরা মানে হলো এমন ব্যক্তি, যে অন্যদের ভালো পথে চালায়। ডোরেমন তো নবিতাকে সবসময় ভালো পথে চলতেই শেখায়। যাতে সে ভালো কাজ করে আর ঠিকমতো পড়াশোনা করে।
 
কিন্তু বলে যে রাখা ভালো যে, ডোরেমন আসলে একটা রোবট বিড়াল! ভবিষ্যৎ থেকে আসা এক রোবট!

আর একটা তথ্য ডোরেমন যে পকেট থেকে ও একটার পর একটা গ্যাজেট বের করে, সেই পকেটটা আসলে একটা ফোর ডাইমেনশনাল পকেট। মানে ফোর-ডি পকেট আরকি! জাপানি ভাষায় ওরা বলে ‘ইয়োজিন পকেট’। ওখান থেকে ও আসলে ভবিষ্যতের নানা টুলস বের করে। আর ভবিষ্যতের ওই টুলসগুলোকেই আমরা বলি গ্যাজেট।

ডোরেমন মূলত এসেছে নবিতার জন্যই। নবিতার কোনো কাজে মনোযোগ নেই, শুধু খেলা আর খেলা। আর সব জায়গায় শর্টকাট  খোঁজে। কিভাবে তাড়াতাড়ি হোমওয়ার্ক করা যায়, কিভাবে তাড়াতাড়ি বাজার করে আনা যায়, খালি এসব দুষ্টু চিন্তা। কিন্তু জীবনে উন্নতির জন্য কি আর এমন কোনো শর্টকাট আছে?

তার উপর ও খুব ভীতু।   বড় হয়ে ও হলো যেমন গরীব, তেমনি অভাগা। আর ওর বংশধরদেরও অবস্থাও হলো তেমনই।

তখন ওর নাতির যে নাতি, তার নাতি সিওয়াসি ভবিষ্যৎ থেকে ওর কাছে পাঠালো ডোরেমনকে। যাতে নবিতা, ডোরেমনের কাছ থেকে জীবনে উন্নতি করার যতো রকম শিক্ষা দরকার, সে সব পেয়ে জীবনে উন্নতি করতে পারে। আর তাহলেই তো ওর বংশধররাও বেশ উন্নতি করতে পারবে। তখন আর তাদের এ গরীব হালও থাকবে না, এতো কষ্টও থাকবে না।

এসব  কারণেই ডোরেমনের সৃষ্টি!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।