ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সংবর্ধনায় যা বলেছেন নতুন তিন বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
সংবর্ধনায় যা বলেছেন নতুন তিন বিচারপতি

ঢাকা: আপিল বিভাগের নতুন নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আপিল বিভাগের এক নম্বর এজলাসে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে তাদের এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সংবর্ধনায় নতুন তিন বিচারপতির জীবন তুলে ধরে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

এ অভিবাদনের জবাবে বক্তব্য দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।   

আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে নিজের আগামীর পথচলা আনন্দময় হবে বলে আশা প্রকাশ করে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম বলেন, আপনাদের সবার প্রত্যাশা পূরণে শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে যাব ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট বিভাগে দীর্ঘ ১৯ বছর বিচারকার্য পরিচালনাকালে সব আইনজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যক্তিগত স্টাফসহ সবার যে সহযোগিতা পেয়েছি আশা করি ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।

বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস মৃক্তিযুদ্ধ ও মহান স্বাধীনতাসহ এ রাষ্ট্রের যা কিছু অর্জন তার পেছনে দৃশ্যমান ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুদৃঢ় ও আদর্শিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব। রাষ্ট্রের সব স্তরে নেতৃত্বের জায়গাটি আদর্শিক ও নৈতিকভাবে সঠিক ও সুদৃঢ় হলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। অনুরাগ ও বিরাগের ঊর্ধ্বে উঠে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক ধারায় সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের আর্থ-সামাজিক ও মানবসম্পদের উন্নয়ন, রাষ্ট্রের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠমোগত উন্নয়ন, জাতিগতভবে আমাদের জন্মের ইতিহাস, ‘জাতির পিতা ও বাংলাদেশে’ এসব জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্থায়িত্বকরণ অপরিহার্য।

তিনি আরও বলেন, পরিবার থেকে রাষ্ট্রের তিনটি অংশেই সাহসী, বিচক্ষণ, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নির্লোভ, ত্যাগী, আদর্শিক, সৎ নেতৃত্ব আজ ভীষণ প্রয়োজন।  একটি জনকল্যাণকর সুখী-সমৃদ্ধশালী গণতান্ত্রিক উন্নত সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপকে স্থায়ী করতে স্বাধীন-স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেন, বিশ্বাস করি ঐক্যবদ্ধ কাজ যেকোনো ধরনের সংকট দূরীভূত করে সমাজকে পরিচ্ছন্ন করে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর এজন্য প্রয়োজন মানবিক ভ্রাতৃত্ববোধ। সেই সঙ্গে হতে হবে নির্লোভ ও ত্যাগী। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই আদর্শের পথেই আমাদের উজ্জ্বীবিত করে গেছেন। আমরা প্রত্যেকেই তার আদর্শকে ধারণ এবং লালন করে নিজেকে স্ব স্ব অবস্থানে থেকে একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারি।

কর্মজীবনের আগামী সময়টুকু দেশ ও জাতির সেবায় বিলিয়ে দিতে চাই। সততা, কর্তব্য-নিষ্ঠা আর পরিশ্রম দিয়ে আগের মতোই নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই এ মহান পেশায়- উল্লেখ করেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।

গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।  

তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট বিভাগের কর্মরত তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে আপিল বিভাগে বিচারক নিয়োগ করেছেন।

তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।

একইদিন বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তিন বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এ তিনজনসহ আপিল বিভাগে এখন বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়ালো নয়জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।