ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আপাতত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না জিএম কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
আপাতত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না জিএম কাদের ফাইল ফটো

ঢাকা: গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। আর  ৯ জানুয়ারি ধার্য তারিখে নিম্ন আদালতে জিএম কাদেরের আপিল শুনানি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ফলে এ সময় পর্যন্ত তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনকারী জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। জি এম কাদেরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা দলটির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ‘১ নম্বর প্রতিপক্ষ (জি এম কাদের) ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের গঠনতন্ত্রের আলোকে পার্টির কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করতে পারে এবং কোনো কার্য গ্রহণ করতে না পারে সে মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার’ আদেশ দেন।

পরে এ আদেশ প্রত্যাহারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের আবেদন ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেন একই আদালত। এ খারিজাদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন জি এম কাদের। জেলা জজ এ আবেদন শুনানির জন্য ৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। পরে শুনানির আদেশ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করলে ২৪ নভেম্বর জেলা জজ আদালত সেটিও খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করেন জি এম কাদের।

২৯ নভেম্বর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৩০ অক্টোববের নিষেধাজ্ঞার আদেশ ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে রুল জারি করেন। এরপর জিয়াউল হক মৃধা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। ২০ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। একইসঙ্গে আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।

তার ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগে শুনানি হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।

৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন। ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেন। অন্যদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা অবৈধ।

পরে সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছিলেন জিএম কাদের। হাইকোর্ট তখন নিষধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেন। তার বিরুদ্ধে মামলার বাদী জিয়াউল মৃধা আপিল বিভাগে আবেদন করেন। তখন ৩০ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। আর আজকে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ হাইকোর্টের ওই স্টে দেওয়ার আদেশটা ডিসমিস করে দেন। আর জেলা আদালতে জিএম কাদের যে আপিলটা করেছেন সেটা ৯ জানুয়ারি শুনানি করতে বলেছেন। যার ফলে নিম্ন আদালত তার দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার যে আদেশ দিয়েছিলেন সেটা বহাল থাকলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২২
ইএস/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।