ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

৫১ বছর আগের হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩
৫১ বছর আগের হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন আদালতে আসামিরা।

খুলনা: খুলনায় অর্ধশত বছর পর আমিন উদ্দিন শেখ হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আমজাদ মিনা (৬৭) ও সাবাজ হালদার (৭৫)।   রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শেখ এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর রাতে আসামি শাবাজ হালদার, আমজাদ মিনা ও জলিল হাওলাদারসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫/৬ জন হাতে রাইফেল, বন্দুক ও রামদাসহ ধারালো অস্ত্রের মুখে আমিন উদ্দিন শেখকে তার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। তাকে তার বাড়ির অদূরে একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। আসামিরা আমিন উদ্দিনের বুকে গুলি এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা কেটে হত্যা করেন। সেই মাথা পুকুরে ফেলে দিয়ে আসামিরা চলে যান। পরে বাদীর ভাই, সাক্ষী ও ভাবি তার বাবার মরদেহ জড়িয়ে কান্নাকাটি কর থাকেন এবং তার বাবার খণ্ডিত মাথা খোঁজাখুঁজি করেন। পরের দিন সকালে পুকুরে তার বাবা খণ্ডিত মাথা দেখেন খুলনায় বসবাসরত বাদীর বড় ভাই বর্তমানে মৃত শেখ নিজাম উদ্দিন। খবর পেয়ে বাদীর বাবার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। শেখ নিজাম উদ্দিনের বাবাকে ২০ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে তাদের চাঁদপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। ওই সালে ১৭ ডিসেম্বর পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে পুনরায় দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পরদিন তাদের চাঁদপুর গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।

বাদী ও তার পরিবারের সব সদস্যদের জীবননাশের হুমকির কারণে এবং পরিবেশ না থাকায় তারা কোনো মামলা করতে পারেননি। সরকার নতুন করে আইনানুগভাবে সুযোগ দেওয়ায় নিহত আমিনের ছেলে অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আলী নিজে বাদী হয়ে তার বাবার হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়ে আদালতে নালিশি দরখাস্ত দায়ের করেন। এ ঘটনায় রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদালতের নির্দেশে এফআইআর ফরমপূরণ করে মামলা রুজু করেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি শেখ এনামুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর আমিন উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের পর তার পরিবারের সদস্যদের জীবনের হুমকি থাকার কারণে তখন মামলা করতে পারেননি।  ২০১০ সালে নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তিন আসামির মধ্যে জলিল হাওলাদার মৃত্যুবরণ করেছে। আজ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামি শাবাজ হালদার ও আমজাদ মিনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৩
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।