ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ছাত্রদল নেতা জিসান-আরিফ রিমান্ডে, ৪ জন কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২৩
ছাত্রদল নেতা জিসান-আরিফ রিমান্ডে, ৪ জন কারাগারে

ঢাকা: নিখোঁজের পর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার ছাত্রদলের দুই নেতার অস্ত্র মামলায় দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (২০ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে পৃথকভাবে এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া দুজন হলেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসান (৩১) ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ বিল্লাহ (৩০)।  

এ ছাড়া অন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন, সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওরফে হাসান (৩২), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ (২৯), কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২)।  

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান জোনের উপ-পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান ছাত্রদলের এই ছয়জনকে আদালতে হাজির করেন। এর মধ্যে জিসান ও আরিফকে লালবাগ থানায় করা অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তিনি।

একই থানায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অন্য চার আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আসামিপক্ষে জিসান ও আরিফের পক্ষে রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিন ও অপর চারজনের পক্ষে শুধু জামিন আবেদন করা হয়।  
শুনানিকালে জিসান ও আরিফকে এজলাসে তোলা হয়। অন্য চার আসামিকে এজলাসে তোলা হয়নি।

প্রথমে জিসান ও আরিফকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ। এরপর আসামিদের রিমান্ড ও জামিনের বিষয়ে শুনানি হয়।  

আসামিপক্ষে শুনানি করেন মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মহসিন মিয়া, মোসলেহ উদ্দিন জসিম, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহসহ কয়েকজন আইনজীবী। শুনানিতে তারা বলেন, দুই দিন আগে সাদা পোশাকধারীরা এদের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়। গুম করার উদ্দেশ্য তাদের তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ সর্বত্র তাদের নিখোঁজের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সেটা আর করতে পারেনি। দুই দিন আগে অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। তারা মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। দয়া করে তাদের জামিন দেওয়া হোক।

রাষ্ট্রপক্ষ জিসান ও আরিফের পক্ষে রিমান্ডের প্রার্থনা করে এবং বাকিদের জামিনের বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে বিচারক জিসান ও আরিফের দুই দিনের রিমান্ড ও অপর চারজনের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  
সিএমএম আদালতে লালবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক শওকত আকবর এ তথ্য জানান।

এর আগে শনিবার (১৯ আগস্ট) তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শুক্রবার (১৮ আগস্ট) এই ছয় ছাত্রদল নেতাকে ডিবি তুলে নিয়ে যায়।  

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, মামলার এজাহারে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেভাবেই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রগুলোর মধ্যে দুইটি পাবনা ও একটি টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করেন তারা।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন।  

তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে তারা অস্ত্র সংগ্রহ করে এই পরিকল্পনা করছিলেন। তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কথোপকথনের সূত্রে কাদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে সেই তথ্য জানা গেছে। অস্ত্র সরবরাহকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২৩
কেআই/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।