ঢাকা: নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার কক্ষের সামনে সাটানো নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) তার এই নেমপ্লেট খুলে ফেলেন আরেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ফজলুল হক।
এরপর এস এম ফজলুল হক জানান, রাষ্ট্রের আইনজীবী হিসেবে ডেপুটি অ্যাটর্নি হিসেবে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার কাজ হলো রাষ্ট্রের স্বার্থ দেখা। অথচ তিনি রাষ্ট্রের একজন আইন কর্মকর্তা হয়ে রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এ কারণে তার নেমপ্লেট অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে থাকতে পারেন না। তাই নেমপ্লেট খুলে ফেলেছি।
এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন এমরান আহম্মদ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে হয় তার পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের পারমিশন নিয়ে। তিনি ডিএজি থেকে সেটি করেননি। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি এটা দেখব।
এদিকে মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন বলেছেন, কোনো পাল্টা বিবৃতি তৈরি করা হয়নি এবং আইন কর্মকর্তাদের সই করতেও বলা হয়নি। তার মতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যায় এমন বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানানো ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তাকে সই করতে বলিনি। আমি কোনো আইন কর্মকর্তাকে বলি না যে আপনি এটা বা ওটা সই করেন। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আমাদের অফিস থেকে কোনো বিবৃতি তৈরি হয়নি। সত্যতা যাচাই না করে সাংবাদিকদের কাছে সেজে-গুজে এসে বলে দিলেন? এর উদ্দেশ্যে টা কী ছিল? নিশ্চিতভাবে তিনি কোনো অন্য উদ্দেশ্যে এটা করেছেন। কাউকে খুশি করার জন্য এটা করেছেন হয়তো।
এর আগে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, অধ্যাপক ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন যে, তাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটার বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। নোটিশ দেওয়া হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে আমি স্বাক্ষর করব না।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল দেশটির যে আইন সংস্কার হচ্ছে; বিচার সম্পর্কিত, তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষর না চিন্তাটাও সে রকমই।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন যে বিবৃতি দিয়েছেন, আমি তাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
ইএস/এসআইএ