ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সিলেটে হত্যায় মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
সিলেটে হত্যায় মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন আদালতের রায়: প্রতীকী ছবি

সিলেট: সিলেটে দোকান কর্মচারী সজল বিশ্বাস হত্যা মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি রায়ে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অপর একটি ধারায় আরও ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বাদীর দোকানে প্রবেশের অপরাধে তাদের পৃথক আরেকটি ধারায় ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, ২ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে একমাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সিলেটের সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ভোলার কান্দি গ্রামের মৃত দছির আলীর ছেলে শাকিল (২০) ও একই গ্রামের মিয়াধনের ছেলে সুমন আহমদ (২২)।

মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের নিজ ঘিলাছড়া ইছাপুর গ্রামে বাদি ঋষিকেশ দে’র বাড়ির সামনের ভূমিমালের দোকান কর্মচারী ছিলেন সজল বিশ্বাস। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি ঋষিকেশ দে’র দোকানে কাজ করে আসছিলেন।

২০২২ সালের ২০ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাদীর বাড়িতে খাবার খেতে যান সজল বিশ্বাস। রাত ১১টার দিকে ফিরে দোকানে ঘুমাতে যান সজল। রাত পৌনে ১২টার দিকে দোকানে ঢুকে দুর্বৃত্তরা সজল বিশ্বাসকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার পর মরদেহ দোকানের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়। সজলের মরদেহ মেঝেতে দেখে স্থানীয় এনামুল হক দোকান মালিককে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় দোকান মালিক ঋষিকেষ দে বাদী হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর সাক্ষীদের দেওয়া তথ্যানুসারে ঘিলাছড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা থেকে শাকিল, সুমন, জিপু ও জুবেলকে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মূলত; দোকান থেকে মালামাল কেনার নিয়ে সজল বিশ্বাসের সঙ্গে আসামিদের সঙ্গে তর্কাতর্কির জেরে ঘটনার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামিরা। এরপর রাত সোয়া ১১টার দিকে সজল বিশ্বাস তালা খুলে দোকানে প্রবেশ করা মাত্র সজল বিশ্বাসের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। হত্যার পর দোকানের ক্যাশ থেকে ৩ হাজার ২৩০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছিল আসামিরা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেঞ্চুগঞ্জ থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিক উজ জামান জুনেল আসামি শাকিল ও সুমনকে অভিযুক্ত করে ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং শিশু আতিক মিয়া, জিপু মিয়া ও জুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষীপত্র বিচারার্থে শিশু আদালতে দাখিল করেন।

এ বছরের ১২ জুন মামলাটি বিচারের জন্য ওই আদালতে পাঠানো হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৮ জুন আসামি শাকিল ও সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানিতে ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।