ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

৭ খুন মামলার রায় ১৬ জানুয়ারি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
৭ খুন মামলার রায় ১৬ জানুয়ারি

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলার রায় দেওয়া হবে আগামী বছরের ১৬ জানুয়ারি। মামলার সর্বশেষ ধাপ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে বুধবার (৩০ নভেম্বর) রায়ের এ দিন ধার্য করেছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত।

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলার রায় দেওয়া হবে আগামী বছরের ১৬ জানুয়ারি।

 

মামলার সর্বশেষ ধাপ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে বুধবার (৩০ নভেম্বর) রায়ের এ দিন ধার্য করেছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত।

 

সাত খুনের ঘটনায় দু’টি মামলার বিচারিক কার্যক্রম একসঙ্গে শেষ হয়েছে। একটি মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল ও অপরটির বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।

গত ২১ নভেম্বর থেকে বুধবার পর্যন্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষে পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, অ্যাডভোকেট সুলতান উজ জামান, অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিনসহ পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবীরা।   এর মধ্যে বুধবার শেষদিন সকাল দশটা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গ্রেফতারকৃত চাকরিচ্যুত র‌্যাব কর্মকর্তা এম এম রানার অসমাপ্ত এবং বজলুর রহমান ও আসাদুজ্জামানের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়।

নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, এর মধ্য দিয়ে সাত খুনের দু’টি মামলায় গ্রেফতারকৃত ২৩ ও পলাতক ১২ আসামির সবার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। পরে আদালত আগামী ১৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ২৪ ও ৩১ অক্টোবর ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করেন গ্রেফতারকৃত ২৩ আসামি। মোট ৩৫ আসামির বাকি ১২ জন পলাতক থাকায় তারা এ সুযোগ পাননি।

দু’টি মামলারই অভিন্ন সাক্ষী ১২৭ জন করে। তাদের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১০৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।

সাত খুনের দু’টি মামলার চার্জশিটে অভিন্ন ৩৫ জন করে আসামি। তাদের মধ্যে ২৩ জন গ্রেফতার ও ১২ জন পলাতক আছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (অব.) মাসুদ রানা, র‌্যাবের সদস্য এসআই পূর্ণেন্দু বালা, এএসআই বজলুর রহমান, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন কনস্টেবল বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, সিপাহী আবু তৈয়্যব, সিপাহী নুরুজ্জামান, সিপাহী আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের তিনদিন পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার ৪ সহকর্মী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে গত বছরের ৮ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ মণ্ডল সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তবে একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি তার মামলায় এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে বাদ দেওয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগপত্র দেওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করে নারাজি আবেদন দাখিল করেন। প্রথমে বিচারিক হাকিম আদালত ও পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত তা খারিজ করে দেন। পরে সেলিনা ইসলাম বিউটি অধিকতর তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে আদেশে বলেন, পুলিশ চাইলে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করতে পারে। তবে মামলাটিতে হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার ধারা যুক্ত করে বিচার করার জন্য জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

গত ০৮ ফেব্রুয়ারি ৭ খুনের দু’টি মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামির উপস্থিতিতে আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন।

র‌্যাবের ৮ সদস্যসহ পলাতক ১২ আসামির অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। তবে পলাতক ১২ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের খরচে ৫ আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।