ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নাজমুল হুদার আবেদনে সাড়া দেননি আপিল বিভাগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৮
নাজমুল হুদার আবেদনে সাড়া দেননি আপিল বিভাগ নাজমুল হুদা। ফাইল ছবি

ঢাকা: বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ ছাড়াই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের মামলায় হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করতে হলফনামার অনুমতি চেয়ে করা সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদার আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ।

রোববার (০৭ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকা বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে নাজমুল হুদা নিজেই শুনানি করেন।

এ সময় দুদকের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করতে হলফনামার অনুমতি চেয়ে করা সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদার আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এখন হাইকোর্টের রায় পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

৮ নভেম্বর হাইকোর্ট দুর্নীতির এক মামলায় নাজমুল হুদাকে চার বছর কারাদণ্ড এবং স্ত্রী সিগমা হুদার কারাভোগকালীন সময়কে তার সাজা হিসেবে ঘোষণা করেন। আদালত ওই রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।

রায়ের পর আত্মসমর্পণ না করেই নাজমুল হুদা হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের জন্য আবেদন (এফিডেফিট) করার অনুমতি চান।
 
এর আগে মঙ্গলবার শুনানির সময় আদালত বলেন, রুলসে এটার সুযোগ নেই। আগে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
 
জবাবে নাজমুল হুদা বলেন, এ মামলায় আপিল বিভাগের দেওয়া আগের আদেশ আইন সম্মত হয়নি।

তখন আদালত বলেন, আপিল বিভাগের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করার সুযোগ নেই। আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করায় ভারতের এক বিচারপতির ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল।
 
নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুদকের উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
 
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, সাপ্তাহিক পত্রিকা 'খবরের অন্তরালে'র জন্য মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা।

২০০৭ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত মামলাটির রায়ে নাজমুল হুদাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করেন। তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

খুরশীদ আলম খান পরে জানান, নাজমুল হুদার সাজা কমেছে তিন বছর। তবে জরিমানার বিষয়ে কিছু বলেননি হাইকোর্ট। সুতরাং, আড়াই কোটি টাকা জরিমানা তাকে দিতেই হবে। অন্য আসামি সিগমা হুদা বেশ কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। ওই সময়কেই তার সাজা হিসেবে গণ্য করতে বলেছেন আদালত।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ তাদের খালাস দেন হাইকোর্ট।
 
পরে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ০১ ডিসেম্বর খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। গেল বছরের ১৩ এপ্রিল আদেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর হাইকোর্টে এ মামলার পুনঃশুনানি নেওয়া হয়।

পরে ৮ নভেম্বর নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সিগমা হুদার কারাগারে থাকার সময়কে সাজা হিসেবে গণ্য করেছেন।

বিচারিক আদালত যেদিন রায় গ্রহণ করবেন, সেদিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এর মধ্যে এ মামলায় আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার করা রিট আবেদনও খারিজ করেন হাইকোর্ট।
  
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৭
ইএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।