ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রথীশ চন্দ্র হত্যায় স্ত্রী দীপার মৃত্যুদণ্ড

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
রথীশ চন্দ্র হত্যায় স্ত্রী দীপার মৃত্যুদণ্ড রথীশের ঘাতক স্ত্রী দীপা (ইনসেটে রথীশ চন্দ্র ভৌমিক)। ছবি: বাংলানিউজ

রংপুর: আইনজীবী অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবু সোনা হত্যা মামলায় তার স্ত্রী দীপা ভৌমিক ওরফে স্নিগ্ধাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন রংপুরের একটি আদালত। 

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর জেলা দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।  

এর আগে মামলার প্রধান আসামি রথীশ চন্দ্রের স্ত্রী দীপা ভৌমিক ওরফে স্নিগ্ধাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতেই ছিলেন।  

এ সময় তিনি বেশ স্বাভাবিক ছিলেন। চেহারায় কিছুটা ক্লান্তি ভাব লক্ষ্য করা গেলেও এই নৃশংস ঘটনার জন্য কোনো অনুশোচনার ভাব চোখে পড়েনি। পুলিশ প্রহরায় স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করেন তিনি।  
 
রায় ঘোষণার পর দুপুর একটার কিছু পর আদালত চত্বর থেকে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।  

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা চাই দ্রুত এই রায় কার্যকর করা হোক। ’ 

এ সময় নিহত রথীশ চন্দ্রের ভাই সুশান্ত ভৌমিকও ছিলেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা এ রায়ে খুশি। তবুও আমাদের ভাইকে আর ফেরত পাবো না। আর কারও কপালে যেন এমন নৃশংসতা না ঘটে এই কামনা করি। ’

আলোচিত রথীশ চন্দ্র হত্যা মামলায় মোট সাক্ষী ৩৭ জন। এসব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চলতি বছরের গত ২১ জানুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।  
রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মামলার আইনজীবী পিপি আবদুল মালেক।  ছবি: বাংলানিউজমামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামির মধ্যে একমাত্র জীবিত আছেন নিহত রথীশ চন্দ্রের স্ত্রী দীপা সরকার ওরফে স্নিগ্ধা। মামলার অপর আসামি দীপার প্রেমিক কামরুল ইসলাম গত বছরের ১০ নভেম্বর ভোরে কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।  

পরে তাকে আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়; সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রথীশ চন্দ্র রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, জেলা আইনজীবী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।  

রংপুর জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। জেলা আইনজীবী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক বাবু সোনা নামে পরিচিত এই আইনজীবী ছিলেন হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট ও রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি।

এ ছাড়া তিনি জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম হত্যা মামলার সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলারও সাক্ষী ছিলেন তিনি।

গত বছরের ২৯ মার্চ রথীশ চন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজ হন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। পাঁচদিন পর (৩ এপ্রিল) রথীশের বাড়ি থেকে কিছু দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়ায় একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে বালুচাপা দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।  

পরে রথীশের ভাই সুশান্ত ভৌমিক মরদেহটি শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় বাদী হয়ে থানায় মামলাও করেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯/আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।