ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাসচাপায় রাজীব-দিয়ার মৃত্যু: মামলার রায় রোববার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
বাসচাপায় রাজীব-দিয়ার মৃত্যু: মামলার রায় রোববার

ঢাকা: রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব-দিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় হবে রোববার (০১ ডিসেম্বর)। এদিন বেলা তিনটায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করবেন।

দুই বাসের রেষারেষিতে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা মামলায় গত ৭ অক্টোবর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে বিচারকাজ শেষ হয়। ওইদিনই আদালত এ মামলার রায়ের জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

এ মামলার মোট আসামি ছয়জন। যার মধ্যে জাবালে নূর পরিবহনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী এনায়েত হোসেন কারাগারে রয়েছেন।  

জামিনে থাকা জাবালে নূর পরিবহনের আরেক মালিক শাহাদাত হোসেনের মামলা উচ্চআদালতের নির্দেশে স্থগিত আছে। আরেক চালকের সহকারী কাজী আসাদ পলাতক রয়েছেন।

এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। যার মধ্যে ৩০৪ ধারায় অপরাধজনক নরহত্যার অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি রয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

মামলায় আসামিদের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দুটি গাড়ির মধ্যে রেষারেষির ফলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি নিষ্পাপ কিশোর-কিশোরীর প্রাণ ঝড়ে যায়। এটিকে কোনোভাবেই নিছক দুর্ঘটনা বলা যায় না। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মানুষের মনে একটা জনরোষ তৈরি হয়েছিল। বিচার শুরুর পর আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা মামলাটি পরিচালনা করেছি।  

‘দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অপরাধজনক নরহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা আশা করছি আইন অনুযায়ী আসামিরা সর্বোচ্চ শাস্তিই পাবেন। ’

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি গাড়ির চালক রেষারেষি করে একটি বাস রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে র‌্যাডিসন হোটেল সংলগ্ন সড়কে অপেক্ষামাণ শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায়। এ সময় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অনেকে।

তারা হলেন- দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ওরফে রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম ওরফে মিম (১৬)।  

পরে ঘটনার দিন রাতেই নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন।

পরে ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।  

আদালত তা আমলে নিয়ে ওই বছরের ২৫ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।  এরপর বিচার প্রক্রিয়ায় ৪১ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন।  

সবশেষ গত ৭ অক্টোবর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।

রাজিব ও দিয়ার মৃত্যুর পর সারাদেশে সপ্তাহ খানেক নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা নজিরবিহীন আন্দোলন গড়ে তোলে। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলন থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
কেআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।