ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘ফাহাদ হত্যার পরিকল্পনার দিন মোর্শেদ রাজশাহীতে ছিলেন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
‘ফাহাদ হত্যার পরিকল্পনার দিন মোর্শেদ রাজশাহীতে ছিলেন’

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েলর (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার পরিকল্পনার দিন আসামি মোর্শেদ অমত্য ইসলাম রাজশাজীতে ছিলেন বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী ইমরুল হাসান।

রোববার (১২ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরার আদালতে মোর্শেদ আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জামিন শুনানিতে মোর্শেদের আইনজীবী ইমরুল হাসান বলেন, অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে ঘটনার পরিকল্পনা হয়েছে ৫ অক্টোবর রাতে।

সেদিন মোর্শেদ রাজশাহীতে ছিলেন। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাকে জামিন দিলে পলাতক হবেন না। আমরা যেকোনো শর্তে তার জামিন চাচ্ছি।

জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, মামলাটি চাঞ্চল্যকর। মোর্শেদ এজাহারভুক্ত ১৭ নম্বর আসামি। ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। তাই জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হোক।

শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এদিকে আদালতের আদেশের পর এজলাসের কক্ষেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মোর্শেদের বাবা রবিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ৫ অক্টোবর হলের ক্যান্টিনে আসামিরা আবরারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই মিটিংয়ে মোর্শেদ উপস্থিত ছিল। কিন্তু ওই সময়তো মোর্শেদ গ্রামের বাড়িতে ছিল। সে ৬ অক্টোবর ঢাকায় আসে। আমাদের কাছে বাসের টিকিটও আছে। সে কী করে আবরারকে হত্যার পরিকল্পনা করে? আমার ছেলে নির্দোষ।

তিনি আরও বলেন, সবার মতো আমিও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আমার ছেলে আবরারকে পানি খাওয়াতে ও চিকিৎসকের কাছে নিতে চেয়েছিল। আবরারকে বাঁচানোর জন্য সে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। আমার ছেলে ঘটনার দিন রাজশাহী থেকে ঢাকায় আসে। ছেলেকে অনেক আশা করে বুয়েটে ভর্তি করেছিলাম। সে নির্দোষ। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। ’

গত ৫ জানুয়ারি পলাতক আসামিদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলে আগামী ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে। নির্ধারিত দিনের একদিন আগেই তিনি আত্মসমর্পণ করলেন।

এদিকে মোর্শেদ আত্মসমর্পণের পর চার্জশিটভূক্ত আর তিন আসামি পলাতক রইলেন। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।

গত ১৩ নভেম্বর মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

গত বছর ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ।

এ ঘটনায় পরদিন নিহত আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
কেআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।