ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৩ মাস সময়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৩ মাস সময়

ঢাকা: চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে থাকা কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে তিন মাসের সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আগে সংশ্লিষ্ট স্থানের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হাজিরের পর বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।  

আদালতে চেয়ারম্যানের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরানুল কবীর।

রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

পরে আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরানুল কবীর বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে থাকা কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদেরকে (বন্দর কর্তৃপক্ষ) তিন মাসের সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আগে সংশ্লিষ্ট স্থানের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া উচ্ছেদ কার্যক্রমে আমাদের সহায়তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ মে দিন রেখেছেন আদালত। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

মনজিল মোরসেদ বলেন, কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ২০১৬ সালে রায় দিয়েছিলেন। এসব স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য আমরা বারবার আদালতে আসতেছি। সর্বশেষ ডিসির পক্ষ থেকে তার অধীনের জায়গাগুলো কিছু তারা উচ্ছেদ করেছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলছে যে, বন্দর এলাকায় যে জায়গা সেটা তারা উচ্ছেদ করতে পারবে না। কারণ ওখানে বন্দরের কর্তৃত্ব। তখন আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট বন্দর চেয়ারম্যানকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বললেন। তখন তারা সময় চেয়ে বললো ৫৮ একর সম্পত্তির মধ্যে ২০ একর উচ্ছেদ করে ফেলছি, ছয় মাস সময় দেন। কিন্তু আমাদের আপত্তির পর কোর্ট তিন মাস সময় দিয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। তিন মাস পরে কোর্ট বন্দর চেয়ারম্যানকে হাজির হতে বললো। তখন আবার একটা দরখাস্ত দিলো আরও কিছু সময় পরে হাজির হওয়ার জন্য। এরপর আদালত ১১ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন।

মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, আজকে হাজির হয়ে (চেয়ারম্যান) লিখিত আবেদন দিয়ে বলেছেন, আমরা (বন্দর কর্তৃপক্ষ) কাজ করতেছি। অলরেডি ৫৮ একরের মধ্যে ৩৫ একর উচ্ছেদ করেছি। ২৩ একর উচ্ছেদে বিভিন্ন সমস্যা আছে। আরও ছয় মাস সময় চাই। তখন আমরা আপত্তি দিয়েছি। কোর্ট তখন সমস্যার বিষয়গুলো লিখিত দিতে বলেন। পরে তারা লিখিতভাবে দিয়েছেন। সেখানে বলেছে-ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করলে তারা উচ্ছেদ করতে পারবে না। এটা একটা ঝামেলা হবে।

‘পরে আদালত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন বিচ্ছিন্ন করে এবং অবৈধ স্থাপনা তিন মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর একটি প্রতিবেদন দিতে হবে। ’

কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ দখল সংক্রান্ত ২০১০ সালে মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়। রিটের পর আদালত রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের আদালত রুল যথাযথ ঘোষণা করে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট রায়ের অনুলিপি দেওয়া হয়।

ওই রায় অনুসারে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। কয়দিন চলার পর তা বন্ধ যায়। এরপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৯ এপ্রিল বন্দরনগরী কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা অবিলম্বে উচ্ছেদে বন্দর চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

উচ্ছেদ করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। মনজিল মোরসেদ জানান, আদালতের নির্দেশে আংশিক উচ্ছেদ করা হয়। এরপর আবার আবেদন করা হলে আদালত বন্দর কর্তৃপক্ষকে সময় দেন। সময় পার হয়ে গেলেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে ফের সময় আবেদন করায় বন্দরের চেয়ারম্যানকে তলব করে আদেশ দেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।