ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

গণধর্ষণের পর হত্যা মামলায় শরীয়তপুরে ৩ জনের ফাঁসি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
গণধর্ষণের পর হত্যা মামলায় শরীয়তপুরে ৩ জনের ফাঁসি

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় হাওয়া বেগম (৪০) নামে এক নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তিন আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

 

বুধবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুস সালাম খান এ আদেশ দেন। হাওয়া বেগম শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার চর ভয়রা উকিলপাড়া গ্রামের রং মিস্ত্রী খোকন উকিলের স্ত্রী।  

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জেলার গোসাইরহাট উপজেলার মধ্য কোদালপুর গ্রামের মৃত লুৎফুল খবির ওরফে কালু উকিলের ছেলে মোর্শেদ উকিল (৫৬), ডামমুড্যা উপজেলার চর ভয়রা উকিলপাড়া গ্রামের মৃত খোরশেদ মুতাইতের ছেলে আব্দুল হক মুতাইত (৪২) ও মৃত মজিদ মুতাইতের ছেলে ছেলে জাকির হোসেন মুতাইত (৩৩)।  

শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও মামলা সূত্রে জানা যায়, রং মিস্ত্রির খোকন উকিল ঢাকায় রংয়ের কাজ করতেন। হাওয়া বেগম তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন। এই সুযোগে আসামি মোর্শেদ উকিলের কুদৃষ্টি পড়ে খোকন উকিলের স্ত্রী হাওয়া বেগমের ওপর। ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে মোর্শেদ উকিল কৌশলে হাওয়া বেগমকে পাশের একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা দেখে ফেলে আব্দুল হল মুতাইত ও জাকির হোসেন মুতাইত। পরে তারা তিনজনে মিলে হাওয়া বেগমকে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ সেখানেই ফেলে রেখে চলে যায়। পরদিন বেলা ১১টার দিকে ডামুড্যা থানা পুলিশ খবর পেয়ে ওই ঘর থেকে হাওয়া বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।  

খবর পেয়ে খোকন উকিল ঢাকা থেকে বাড়ি গিয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসমি করে ডামুড্যা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই তিন আসামিকে গ্রেফতার করলে তারা গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে ৯ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।  

আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আরো তিনজনকে মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে বিচার কাজ শুরু করেন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ওই তিন আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়। আসামিরা সবাই কারগারে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তাদের আদালতে হাজির করা হয়।   

শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া আমরা সন্তুষ্ট। তবে বাদীপক্ষ যদি বাকি আসামিদের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করতে চায় তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।  

মোর্শেদ উকিলের ছেলে শাহীন উকিল বলেন, আমার বাবা সম্পূর্ণ নির্দোষ। ষড়যন্ত্র করে আমার বাবাকে ফাঁসানো হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।  

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, এ রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পাইনী। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।