ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

গ্রেনেড হামলা: দণ্ডিত ২ আসামিকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২০
গ্রেনেড হামলা: দণ্ডিত ২ আসামিকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ

ঢাকা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত পুলিশের সাবেক দুই কর্মকর্তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তাদের জামিন চেয়ে করা আবেদন রোববার (৬ ডিসেম্বর) খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।

তারা হলেন- সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক উপ কমিশনার ওবায়দুর রহমান খান।

আদালতে তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরশাদুর রউফ ও সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জামিলুর রহমান রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এ ম আমিন উদ্দিন।

এ মামলায় সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক উপ কমিশনার ওবায়দুর রহমান খানকে দুই বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আইনজীবীরা জানান, পরে গত বছরের ২৮ জানুয়ারি তারা আত্মসমর্পণ করে আপিল করেন। হাইকোর্ট তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে জরিমানা স্থগিত করেন। ২০২০ সালে ৯ মার্চ তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

এরপর তার আপিল বিভাগে আবেদন করেন। যেটি রোববার খারিজ হয়ে যায়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাটি চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।

তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। দুই বছর তদন্তের পর ২০১১ সালের ৩ জুলাই ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা হয় ৫২।

মোট ৫২ আসামির মধ্যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও মুফতি হান্নান এবং তার সহযোগী শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় কার্যকর হয়। তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলার আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ জনে।  

এ ৪৯ জনের মধ্যে রায় দেওয়ার সময় ৩১ জন কারাগারে ছিলেন। পলাতক ছিলেন বাকি ১৮ জন। তারা হলেন- তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, এটিএম আমিন, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, খান সাঈদ হাসান, ওবায়দুর রহমান, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, রাতুল বাবু, মোহাম্মদ হানিফ, আবদুল মালেক ওরফে, শওকত ওসমান, মাওলানা তাজউদ্দিন, ইকবাল হোসেন, মাওলানা আবু বকর, খলিলুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম। তবে এর মধ্যে এ দুইজন আত্মসমর্পণ করেন।  

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ওই ঘটনায় বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় অপর ১১ আসামিকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২০ 
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।