ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশু তৃষাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার ২ আসামি খালাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
শিশু তৃষাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার ২ আসামি খালাস

যশোর: যশোরের শিশু কথা আফরিন তৃষাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা এই রায় দিয়েছেন।



মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী (পিপি) সেতারা খাতুন। এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী নিহতের বাবা তরিকুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর শহরের ইজিবাইকচালক তরিকুল ইসলাম  খোলাডাঙ্গার স্যালভেশন আর্মিপাড়ার ওমর আলীর বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তার বড় মেয়ে শিশু আফরিন কথা তৃষা কারবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।

২০১৯ সালের ৩ মার্চ বিকেলে বাড়ির পাশে গির্জার মাঠে খেলতে যায় তৃষা। সন্ধ্যার পরও তৃষা বাড়ি না ফেরায় স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি করে তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। পরদিন তৃষার বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ দিন বিকেলে এলাকার প্রফুল্লের বাড়ির পাশে মাটি খোঁড়া দেখে সবার সন্দেহ হয়। এরপর সেখানকার মাটি সারিয়ে বস্তাবন্দি আফরিন কথা তৃষার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এই ব্যাপারে তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দিয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কর্মকর্তা হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাইফুল ইসলামকে আটক করেন। সাইফুল ইসলাম একই এলাকার আব্দুল আওয়ালের ছেলে। কিন্তু ওই সময় সাইফুল শিশু তৃষা হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে। এরপর এই ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন শামীমকে পুলিশ আটক করতে গেলে দুইপক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ে শামীম নিহত হয়। শামীমকে মাদক সেবনের বাধা ও শক্তির সঙ্গে ইজিবাইকে উঠা নিয়ে তৃষার বাবার বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তারা তৃষাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছিল তদন্তে উঠে আসে।

তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যা ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকায় মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুলসহ দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কসবা ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেহাবুর রহমান শিহাব। আদালতে চার্জশিটকালে অভিযুক্ত আসামি মেহেদী হাসান শক্তি গাজী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতকে অনুরোধ করা হয়।

এছাড়া এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শামীম গত বছরের ৬ মার্চ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার কারণে চার্জশিটে তার অব্যাহতির আবেদন করা হয়।  
কিন্তু এরপর চার্জশিটে অভিযুক্ত শক্তি আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন করেন। দীর্ঘদিন পর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত সোমবার। রায়ে আটক আসামি মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের এই মামলায় দায় থেকে খালাস দিয়েছেন।

খালাসপ্রাপ্ত মেহেদী হাসান শক্তি খোলাডাঙ্গা গাজীপাড়ার কামরুজ্জামানের ছেলে মেহেদী হাসান শক্তি এবং সাইফুল ইসলাম মৃত আব্দুল আওয়ালের ছেলে। এই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (বিশেষ পিপি) সেতারা খাতুন বলেছেন, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের এই মামলার দায় থেকে খালাস দিয়েছেন।  

এদিকে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী তরিকুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
ইউজি/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।