ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন সেই তুফান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২১
ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন সেই তুফান তুফান সরকার

বগুড়া: তিন বছর আগের বহুল আলোচিত বগুড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ এবং কিশোরীসহ তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি তুফান সরকারকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফজলুল হক শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নরেশ মুখ্যার্জি।

তুফান সরকার বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। ঘটনার পরে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

নরেশ মুখ্যাজি বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় বগুড়ার বিচারিক আদালতে তুফানের জামিন চাওয়া হলে তার জামিন মঞ্জুর হয়। তবে আমরা এই জামিনের বিরোধিতা করেছিলাম।

আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মোন্নাফ বলেন, আদালত শুনানি শেষে তুফান সরকারকে জামিন দিয়েছেন। ধর্ষণ ছাড়া ওই মেয়ে ও তার মাকে নির্যাতনের মামলাতেও তিনি জামিনে রয়েছেন।

ধর্ষণ ও মাথা ন্যাড়া করার ঘটনায় শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই তুফান সরকারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভালো কলেজে ভর্তি করবেন বলে তুফান মোবাইলে ওই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই বগুড়ায় তুফানের বাড়িতে নিয়ে মেয়েকে ধর্ষণ করেন। তুফানের স্ত্রী বিষয়টি জানতে পেরে ওই ঘটনার জের ধরে ওই বছরের জুলাইয়ের ২৮ তারিখে ওই মেয়ে ও তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেন। বেধড়ক মারধরও করেন। ছাত্রী ধর্ষণ ও মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই আলাদা ধারায় আলোচিত মামলা দুটি দায়ের করেন নির্যাতিত মেয়েটির মা। দুই মামলাতেই তুফান সরকার প্রধান আসামি।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা একটি মামলার তদন্ত শেষে প্রধান আসামি তুফান সরকারসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তুফান ছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- তুফানের স্ত্রী তাছমিন রহমান ওরফে আশা, আশার বড় বোন পৌরসভার নারী কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি, আশার মা লাভলী রহমান ওরফে রুমি, তুফানের সহযোগী মো. আতিকুর রহমান ওরফে আতিক, মুন্না, আলী আযম দীপু, মেহেদী হাসান ওরফে রুপম, সামিউল হক ওরফে শিমুল এবং এমারত আলম খান ওরফে জিতু।

এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলেও প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তুফানের শ্বশুর জামিলুর রহমান ওরফে রুনু, নাপিত জীবন রবিদাস ওরফে যতিনকে।

অন্যদিকে ছাত্রী ও তার মাকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনার মামলায় তুফানসহ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তুফানসহ ১০ জন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাতেও অভিযুক্ত। বাকি তিনজন অভিযুক্ত হলেন- তুফানের শ্বশুর জামিলুর রহমান, নাপিত জীবন রবিদাস এবং বাদুড়তলা এলাকার আনজুয়ারা বেগম।

অভিযোগপত্রে তুফানের সহযোগী মুন্না, আতিকুর রহমান এবং জীবন রবিদাস আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
কেইউএ/এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।