ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সন্তান নিয়ে দেশত্যাগ: ফেঁসে গেলেন বাবা 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
সন্তান নিয়ে দেশত্যাগ: ফেঁসে গেলেন বাবা 

ঢাকা: আদালতের আদেশে শিশুকে হাজির না করে বিদেশ চলে যাওয়ায় বাবা সানিউর টি আই এম নবীকে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মুস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এছাড়া আদালত সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করায় শিশুর দাদা টিআইএম নবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন।

সানিউর অস্ট্রেলিয়ায় থাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডরকে এ আদেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে।  

আদালতে শিশুর মা ভারতীয় নারী সাদিকা শেখের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও কাজী মারুফুল আলম।

এর আগে একটি মানবাধিকার সংগঠন হাইকোর্টে রিট করে। হাইকোর্ট প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৬ আগস্ট মাসহ শিশুকে হাজির করতে নির্দেশ দেন। হাজিরের পর ওইদিন শিশুকে মায়ের জিম্মায় দিয়ে বাবাকে সপ্তাহে তিন দিন দেখা করার সুযোগ দেন।   

কাজী মারুফুল আলম বলেন, ওই আদেশের পর শিশুর কথা চিন্তা করে গুলশান ক্লাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে জিডি করেন বাবা। জিডি মূলে নন এফআইআর মামলাও হয়। আর কৌশলে শিশুটিকে নিয়ে যায় বাবা। বিষয়টি আদালতে জানালে ১৫ নভেম্বর হাইকোর্ট শিশুটিকে পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে আইনজীবীর চেম্বারে হাজির করতে বলেন। কিন্তু শিশুকে হাজির করেনি তারা। এ কারণে আবেদনে শিশুকে বিদেশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। ১৭ নভম্বের আদালত ওই শিশুকে বাবাসহ ২১ নভেম্বর বিকেল ৩টার মধ্যে আদালতে হাজির করাতে পুলিশের ঢাকা মহানগর কমিশনার ও গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

কিন্তু পুলিশ জানায়, শিশুকে নিয়ে ১৬ নভেম্বর বাবা দেশত্যাগ করেছেন। এরপর আদালত শিশুর দাদাকে তলব করেন।  

চলতি বছরের ২৬ আগস্ট আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেছিলেন, ২০১৭ সালে হায়দরাবাদের সাদিকা শেখ নামের এক নারীকে বিয়ে করেন বারিধারার সানিউর টি আই এম নবী। বিয়ের পর তারা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন। কয়েক মাস পর তারা ঢাকায় ফিরে আসেন।

এরই মধ্যে ওই দম্পতির এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু করোনাকালে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়। এমনকি ভারতের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাদিকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়-স্বজনরা জানতে পারেন। এরপর ওই দেশ থেকে তাদের পরিবারের পক্ষে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। এতেও বিষয়টি সমাধান হয়নি। পরে সাদিকার বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান। এর মধ্যে সাদিকাকে ডিভোর্স দেন নবী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
ইএস/জেএইচটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।