ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরে পৃথক হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০২২
লক্ষ্মীপুরে পৃথক হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় আটজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেয়।

লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়ার যুবলীগ নেতা আবদুল হান্নান সুমন (৩২) হত্যার রায়ে ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় দুইজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।  

অপর ঘটনায় হানিফ হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় ছয়জনকে খালাস দেওয়া হয়। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা অনুপস্থিত ছিলেন।  

এ দুটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি ছিলেন দত্তপাড়া এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. জসিম উদ্দিন। ২০১৫ সালের ৮ জুন প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীবাহিনীর হাতে খুন হন তিনি। ফলে দুটি মামলা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়।  

আদালত সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা সুমন হত্যায় সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কাউছার (৪৭), খোরশেদ আলম (৪১), সোহেল রানা (৩৭), সোহাগ (৪৪), রাব্বী (৩৭) ও কালা শাহাদাত (৪৪)। তারা সদর উপজেলার দত্তপাড়া, গোপালপুর ও দক্ষিণ মাগুরী গ্রামের বাসিন্দা।  

এ মামলায় খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- বাবুল ওরফে বাবলু, দত্তপাড়া ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান শামীমের ভাই মানিক এলাহি বাবুল ওরফে আশেক এলাহী। ভিকটিম সুমন উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন।

মামলা সূত্র জানা যায়, ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুমন তার চার বছরের ছেলে সাইফ হান্নাকে সঙ্গ নিয়ে রিকশায় করে দত্তপাড়া বাজার থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পথে সন্ত্রাসী জসিমের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।  

এ ঘটনায় ৮ ডিসেম্বর ভিকটিমের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) পুষ্প বরণ চাকমা আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।  

দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত অভিযুক্ত আটজনের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। অপর দুই আসামিকে খালাস দেন।  

অন্যদিকে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের গনেশ শ্যামপুর গ্রামে হানিফ হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- দিদার হোসেন (৩২) ও ফারুক হোসেন (৩১)। তারা সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর মাগুরী গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলায় মো. ইলিয়াস ওরফে ইলিয়াস কোবরা সাজার আওতায় থাকলেও তিনি মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

খালাস প্রাপ্তরা হলেন- মো. রিপন (৩২), মো. রনি (৩১), ওমর ফারুক (২২), মো. রিয়াদ (২৫), ইসমাইল হোসেন মুন্সি (৩০) ও মো. বাবলু (৩৫)।  

এজাহার সূত্র জানায়, চাঁদার দাবিতে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসামিরা হানিফের দুই পায়ে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ১৫ মে হানিফের বোন মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসী জসিমকে প্রধান করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সেই সময়ের দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আটজনের মধ্যে দুইজনের যাবজ্জীবন ও ছয়জনকে খালাস দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।