ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

অর্থশালীরা কি বিচারের ঊর্ধ্বে, হাইকোর্টের প্রশ্ন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
অর্থশালীরা কি বিচারের ঊর্ধ্বে, হাইকোর্টের প্রশ্ন

ঢাকা: অর্থশালীরা পাওয়ারফুল (শক্তিশালী)। তারা বিচারের ঊর্ধ্বে কিংবা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকবে কি না- দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখেছেন হাইকোর্ট।

একটি ব্যাংকের প্রায় ১১০ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় দুই আসামির জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিতে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এমন প্রশ্ন রাখেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ।

এ সময় আদালতে দুদকের আইনজীবী এম এ আজিজ খান ও খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।

বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডি খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ মামলা করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার নকীবুল ইসলাম।  

এই মামলায় ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ব্যাংকটির তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এএসএম হাসানুল কবীর ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।

২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর এই দুইজনকে জামিন দেন বিচারিক আদালত। পরে সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন।  

এর মধ্যে মামলাটি ২০১৮ সালে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

রোববার ওই দুই জনের জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিতে হাইকোর্ট দুদকের আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ১১০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে। এ মামলাটি এখনো কেন শেষ (বিচার) হচ্ছে না। এদের ধরবে কে? আপনারা ধরছেন চুনোপুটি।

তখন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অবশ্যই দুদকের ধরা উচিত। এদের ধরা হবে।

এ সময় আদালত বলেন, কবে ধরবেন? মামলা ২০১৩ সালে। চার্জশিট ২০১৫ সালে। এরপর ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোর্ট। এত বছর হয়ে গেল। এগুলোর কী হবে? এতে বুঝা যায় কি, যারা অর্থশালী পাওয়ারফুল, তারা বিচারের ঊর্ধ্বে? এরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে? আপনারা বিষয়টি সিরিয়াসলি নিতে দুদক চেয়ারম্যানকে বলবেন-এ ধরনের মামলাগুলো কেন শেষ হচ্ছে না। কেন প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে না? নয় বছর চলে গেছে।

এ সময় এক আসামির আইনজীবী বলেন, আমরা তো নিম্নস্তরের ব্যাংকার।

তখন আদালত প্রশ্নে করে বলেন মামলার প্রধান আসামি খাজা সোলায়মান কে?

জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, বিসমিল্লাহ গ্রুপের। তিনি পলাতক। এক মামলায় তার সাজা হয়েছে। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারে আপনার কোর্টের আদেশও আছে।  

তখন আদালতে অন্য মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আসেন। আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, দেখুন অ্যাটর্নি জেনারেল। মামলার অবস্থা। ২০১৩ সালের মামলা এখনো প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। ১১০ কোটি টাকার মামলা।

এরপর দুদক আইনজীবী বলেন, আমরা হালনাগাদ তথ্য জানাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২

ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।