শীতকালে শসা খাওয়ার পরিমাণটা বাড়িয়ে দিলে উপকার হয়। এমনটি বলেছেন স্বাস্থ্য সচেতনরা।
এই সুযোগে খেদ মিটিয়ে খেয়ে নেন ভোজনরসিকেরা। আর এসব খাবার থেকে শরীরে জমা হয় টক্সিন। খারাপ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যারও সম্মুখীন হতে হয়। বেড়ে যায় ওজন।
শসা খেলে এই টক্সিনের মাত্রা কমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শসায় প্রচুর পরিমাণে পানিসহ ভিটামিন সি এবং কে রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
সবুজ এই সবজির রয়েছে আরও ৮ গুণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক শসা খেলে কি কি উপকার মেলে -
১) শরীরকে ডিটক্সিফাই করে
শসায় যে পানি থাকে, তা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে অনেকটা অদৃশ্য ঝাড়ুর মতো কাজ করে। নিয়মিত শসা খাওয়ায় কিডনিতে সৃষ্ট পাথরও গলে যায়।
২) ভিটামিনের শূন্যতা পূরণ করে
প্রতিদিন আমাদের দেহে যেসব ভিটামিনের দরকার হয়, তার বেশিরভাগই শসার মধ্যে বিদ্যমান। ভিটামিন এ, বি ও সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বাড়ায়। সবুজ শাক ও গাজরের সঙ্গে শসা পিষে রস করে খেলে এই তিন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হবে।
৩) হজম ও ওজন কমাতে সহায়ক
শসায় উচ্চমাত্রায় পানি ও নিম্নমাত্রার ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে। ওজন কমাতে শসা আদর্শ টনিক। শীতে স্যুপ, সালাদ ও নুডলস বেশি খাওয়া হয়। আর এতে বেশি বেশি শসা ব্যবহার করলে ভালো। শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
৪) চোখের জ্যোতি বাড়ায়
রূপচর্চার সময় অনেকেই দেখা যায় শসা না খেয়ে গোল করে কেটে দুই চোখের ওপর দিয়ে রাখছেন। কারণ, তারা জানেন, এটা করলে চোখের পাতায় জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে দেয় শসা। আর চোখের জ্যোতি বাড়াতেও কাজ করে এটি। চোখের প্রদাহপ্রতিরোধক উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় ছানি পড়া ঠেকাতেও এটি কাজ করে।
৪) ত্বকবান্ধব খনিজের সরবরাহকারী
রূপচর্চায় অন্যতম নিয়ামক শসা। এর মধ্যে থাকা উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিকন ত্বকের পরিচর্যায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। এজন্য গোসলের সময় শসা ব্যবহার করেন অনেকে।
৫) চুল ও নখ সতেজ করে
শসার মধ্যে যে খনিজ সিলিকা থাকে তা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়া শসার সালফার ও সিলিকা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৬) ইউরিক অ্যাসিড কমায়
শসায় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা আছে, যা শরীরে জমা ইউরিক অ্যাসিড কমায়। এতে বাতব্যথা থেকে অনেকটাই রেহাই মেলে। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নেমে আসে। এতে গেঁটেবাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৭) মাথাব্যথা কমায় শসা
ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক স্লাইস শসা খেয়ে নিলে রাতে ঘুম ভালো হয়। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর মাথা হালকা লাগে। মাথাধরা থেকে মুক্তি মেলে। ম্যাজম্যাজ করা শরীর ফ্রেস লাগে। শসায় থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগারের ফলে এটি ঘটে।
৮) ক্যানসার প্রতিরোধ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে
শসায় সিকোইসোলারিসিরেসিনোল, ল্যারিসিরেসিনোল ও পিনোরেসিনোল—এ তিনটি আয়ুর্বেদিক উপাদান আছে। জরায়ু, স্তন ও মূত্রগ্রন্থিসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে এই তিন উপাদানের জোরালো সম্পর্ক রয়েছে। ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি দেয়, কোলস্টেরল কমায় ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
এসএএইচ