জয় গোস্বামী যতই বলুন— ‘একটি বিচ্ছেদ থেকে পরের বিচ্ছেদে / যেতে যেতে / কয়েক দিন মাত্র মাঝখানে পাতা আছে মিলনের সাঁকো’, মানুষের মন কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাঁকোর বদলে হাওড়া ব্রিজ দাবি করে। আর সেই কারণেই সম্পর্ক ভাঙলে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সামলে ওঠা এত শক্ত।
সম্পর্ক ভাঙলে নেটমাধ্যমে প্রাক্তনের দৈনন্দিনে নজরদারি? নৈব নৈব চ। যার যাপনের প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী ছিলেন আপনি, হঠাৎ করে তাকে অচেনা ভাবা সহজ নয়। আত্মনিয়ন্ত্রণ কঠিন মনে হলে, শরণাপন্ন হন ‘ব্লক’র। যখন নিজেকে সামলানোই কঠিন মনে হচ্ছে, তখন প্রাক্তনকে জীবনে এগিয়ে যেতে দেখা অতিরিক্ত চাপ ফেলে মনে। যদি পরে স্বাভাবিক কথাবার্তা বজায় রাখতে চান তা হলে এই বিরতিটুকু আবশ্যিক।
সম্পর্ক ভাঙলে সবচেয়ে বড় ভুল, নিজে কেমন রয়েছেন তার থেকে প্রাক্তন কেমন রয়েছেন তার প্রতি বেশি আগ্রহ দেখানো। দুইজনের একই বন্ধুবান্ধব থাকলে, গল্পের ছলেও জানতে চাইবেন না প্রাক্তনের হাল-হকিকত। প্রাক্তনের খবর শুনে নিজের দৈনিক জীবন যাপনের সঙ্গে প্রাক্তনের যাপনের তুলনা করা মানসিক অসুস্থতার দিকে ঠেলে দিতে পারে আপনাকে।
সামাজিকতাকে উপেক্ষা করবেন না। সম্পর্ক ভাঙার ধাক্কায় অনেক সময় নিজেকে গুটিয়ে নেন অনেকে। বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো অর্থহীন মনে হতে পারে। আসতে পারে বিরক্তিবোধ। কিন্তু সম্পর্ক ভাঙার প্রথম কয়েকদিন এই সামাজিকতা অজান্তেই সাহায্য করবে আপনাকে। আসলে প্রাথমিক অভিঘাত থেকে নিজেকে সামলাতে পারলে, কিছু দিন পর নিজের সঙ্গে বোঝাপড়াটাও সহজ হবে অনেক।
বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত যদি নিয়েই থাকেন, দ্বিধাহীন ভাবে সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করুন। টুকরো আলাপচারিতা বজায় রাখলে বিচ্ছেদ আরও দীর্ঘ ও অমসৃণ হয়। এমনকি চলে যেতে পারে অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের দিকেও। কেন সম্পর্ক টিকল না, তার যথাযথ কারণ খোঁজার চেষ্টা খুব বড় ভুল হয়ে দাঁড়ায়।
কোনো ধরনের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। জীবনের অর্থ খুঁজে বার করার সঠিক সময় এটা নয়। ভুলেও কোনো পেশাগত সিদ্ধান্ত নেবেন না। অনেকেই নতুন সম্পর্ক বা অস্থায়ী যৌনতার দিকে ঝোঁকেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। সব মিলিয়ে সহজ নয় বিচ্ছেদ। কাজেই সব কিছু ঠিক থাকার অভিনয় করার বদলে ঠিক হওয়ার পদ্ধতিতে ভরসা রাখুন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
এএটি