হার্ট ভালো থাকলে একজন মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে আর কোনো চিন্তাই করার দরকার হয় না। আর এই কারণেই হয়তো এই প্রবাদটির সৃষ্টি হয়েছে, ‘হৃৎপিণ্ড ভালো থাকলে জীবনের চাকাও সচল থাকে’।
সুস্বাস্থ্য ছাড়া জীবনকে আদৌ পুরোপুরি উপভোগ করা সম্ভব নয়। এবার আপনার জীবনের অন্যদিকগুলো যতই সুন্দর হোক না কেন।
উদাহরণত, আপনি যদি ডায়াবেটিসের মতো নিরাময়ের অযোগ্য কোনো রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আপনাকে হয়তো আপনার সবচেয়ে প্রিয় খাবার খাওয়া বাদ দিতে হতে পারে। আপনি হয়তো শারীরিক দুর্বলতার কারণে আপনার সবচেয়ে প্রিয় তৎপরতায়ও লিপ্ত হতে পারবেন না।
যেমন রোমাঞ্চকর কোনো ক্রীড়া। কিছু রোগ আছে যেগুলো হয়তো আবার অল্পতেই সেরে যায়। কিন্তু এমন কিছু রোগ আছে আবার যেগুলো আপনার জীবনের গুনগত মান পুরোপুরি বদলে দিতে পারে।
মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো হলো হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, লিভার, কিডনি এবং মস্তিষ্ক। এই অঙ্গগুলোর কোনো একটি অঙ্গও যদি সামান্যতম ক্ষতিগ্রস্ত বা দুর্বল হয় তাহলেই আপনার স্বাস্থ্যের বড় ধরনের কোনো সমস্যা হতে পারে। এমনই একটি সমস্যা হলো হার্ট অ্যাটাক।
আমরা জানি প্রতিদিন কী ধরনের খাবার খাই বা না খাই তার ওপরই নির্ভর করে আমাদের হার্টের ভালো থাকা বা খারাপ থাকা।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন যদি নিয়ম করে বাদাম খাওয়া যায় তাহলে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ হতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কেন এবং কীভাবে বাদাম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে।
বাদাম এবং হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের মধ্যে সম্পর্ক আমরা জানি, বাদাম খুবই পুষ্টিকর এবং অনেক স্বাস্থ্যকর খাবারের চেয়ে বেশি সুস্বাদুও বটে। তাই না?
খাবারের সৌন্দর্য বাড়াতে, বাড়তি ফ্লেভার যুক্ত করতে বাদাম ব্যবহৃত হয়। কাঁচা বা ভেজেও খাওয়া যায় বাদাম। হিজলি বাদাম, কাজুবাদাম, চীনা বাদাম, আখরোট এবং চেসনাট কয়েকটি জনপ্রিয় বাদাম।
প্রতিটি বাদামেরই আছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপকারিতা। তবে সবগুলো বাদামেরই আছে একটি বিশেষ কমন উপকারিতা।
উদারহণত, কাজুবাদাম খেলে মাংসপেশি সুগঠিত হয়। তবে এই বাদামই আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আপনার শরীরকে রোগমুক্ত রাখবে।
আমরা ইতোমধ্যেই জানি যে, হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ হয় হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশিতে রক্তের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে। কারণ হৃৎপিণ্ডে রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে গেলে তাতে অক্সিজেন ও রক্তের ঘাটতি দেখা দেয় এবং তা কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
অনেক ক্ষেত্রেই হার্ট অ্যাটাকের কারণে তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক হয় সাধারণত, রক্তের শিরা-উপশিরায় চর্বি এবং কোলেস্টেরল জমে অবরোধ তৈরি করলে। যা হার্টে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
সম্প্রতি দ্য জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলোজিতে বলা হয়, প্রতিদিন যদি অন্তত এক মুঠো বাদাম খাওয়া যায় তাহলে অকালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
গবেষণায় বলা হয়, বাদামে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ‘ই’। এই দুটি উপাদান প্রাকৃতিকভাবেই দেহে কোলোস্টেরলের মাত্রা কমাতে সক্ষম এবং ধমনীতে যে চর্বি ও কোলেস্টেরলের আস্তরণ পড়ে তা পরিষ্কার করতে সক্ষম। ফলে হার্টে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত চলাচল আরো সহজ হয়ে আসে। এর ফলে হার্টঅ্যাটাক সহ অন্যান্য হৃদরোগও প্রতিরোধ হয়।
সুতরাং, অকালে হার্ট অ্যাটাকে মরতে না চাইলে প্রতিদিন অন্তত একমুঠো বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলন!
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪
এএটি