ঢাকা, সোমবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

প্রেম-বিচ্ছেদে ভেঙে পড়েছেন?

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
প্রেম-বিচ্ছেদে ভেঙে পড়েছেন?

প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে। সে ফাঁদে যে কেউ কেউ ধরা পড়বেন, তাতে আর আশ্চর্য কী! তবে প্রেমের সময়টা ঠিক যতটা মধুর, ততটাই কষ্টকর হয়ে ওঠে ‘ধোঁকা’ খেলে।

বেশ কিছু দিন কান্নাকাটি করে, অনেকেই আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়ান, নতুন প্রেমের ফাঁদে পা দেন। কিন্তু সবার জীবনে তেমনটা হয় না। সম্পর্কে যার অনুভূতি যত গভীর, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা তার মনে ততটাই দাগ কাটে। কেউ মুষড়ে পড়লেও সামলে নেন, কেউ আবার অবসাদে ডুবে যান। বিচ্ছেদের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার নজিরও খুব একটা কম নেই।

বিচ্ছেদ কষ্টকর ঠিকই। তা থেকে বেরিয়ে আসার পথও রয়েছে। এমন সময়ে কী করলে কষ্ট কমানো যেতে পারে, এ বিষয়ে মনোরোগ চিকিৎসকরা বলছেন, নতুন প্রজন্মের অনেকেই ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রেম খুঁজে নিচ্ছেন। সেভাবে হয়তো কেউ কাউকে চেনেন না, কিন্তু কিছু দিন কথাবার্তা চলতে না চলতেই অনেকে মানসিকভাবে সংযুক্ত হয়ে পড়েন অন্য মানুষটির সঙ্গে। সেই মানুষটি আদৌ বিশ্বাসের যোগ্য কি না, তা নিয়ে তলিয়ে ভেবেও দেখেন না। অথচ কিছু দিন পরে দেখা যাচ্ছে, দু’জনে দু’জনের পরিপূরক নয়। বিচ্ছেদ অবধারিত। তবে অল্প সময়েই অনেকে এমন ভাবে মন দিয়ে বসেন যে, ভাঙন ভীষণ কষ্টকর হয়ে ওঠে। এই সময়ে সাধারণত কয়েকটি কাজ করা যায়।

* বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো

একলা বসে থাকলেই স্মৃতি মনকে বিষণ্ন করে তুলবে। সেই সময়ে আর ফিরবে না ভেবেই দু’চোখ ঝাপসা হয়ে উঠবে। মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ, এই সময়টা যথা সম্ভব বন্ধু, আত্মীয়, প্রিয় মানুষদের সঙ্গে কাটানো দরকার। কোথাও বেরিয়ে আসা, সিনেমা দেখায় ব্যস্ত করে রাখলে, খানিকটা সময় অতীতের স্মৃতি থেকে দূরে থাকা যাবে। তবে, বিষণ্ণ মনে এর কোনোটাই ভালো লাগতে না-ও পারে। তবু বন্ধুদের সঙ্গে কষ্টের কথা ভাগ করে নিলে মন হালকা লাগবে।

* নিজেকে বোঝানো

নিজেকে প্রশ্ন করা দরকার, যে মানুষটি কষ্ট দিলেন, তিনি সত্যি কি যোগ্য ছিলেন? এমনই পরামর্শ মনোরোগ চিকিৎসকের। তিনি কি সত্যি কোনো দিন ভালোবেসেছিলেন? যদি তা না-ই হয়, তা হলে এই চোখের জল বা কষ্ট অর্থহীন। জীবনে আবার নতুন কেউ আসবেন। শুধু সেই সময়ের জন্য অপেক্ষ করা প্রয়োজন।

* কাজে মন দেওয়া

মানসিক কষ্ট ভোলার অন্যতম উপায় নিজের কাজে মন দেওয়া। নিজেকে সময় দেওয়া। বিচ্ছেদের পরের সময় যতই টালমাটাল হোক না কেন, কর্মজগতে মন দিলে বেশ কিছুটা সময় অন্য সমস্ত দিকগুলো ভুলে থাকা যায়। পেশাজগতে মনঃসংযোগে কাজের উন্নতি হতে বাধ্য। এক্ষেত্রে কাজের জগতে প্রশংসা মিললে, নতুন করে ভালো লাগা তৈরি হবে।

* শখে মন দেওয়া

ছোট থেকে বড় হওয়ার পথে নানা সময়ে নানা রকম শখ তৈরি হয়। অনেক শখ হারিয়েও যায়। জীবনের সেই ভালো লাগা, শখগুলৈাকে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করা যায়। মনোরোগ চিকিৎসকরা বলছেন, এই সময়ে ভালো লাগার বিষয়ে ডুবে গেলে ভালো সময় কাটানো সম্ভব। কেউ গান গাইতে ভালোবাসেন, কেউ ছবি আঁকতে। কারও যদি ফুলের গাছ ভালো লাগে তিনি বাড়ির একটুকরো অংশে বাগান করায় মন দিতে পারেন। নতুন করে গান শিখতে পারেন। আঁকা শেখাতে পারেন। নিজেকে ভালো দিকগুলোতে ডুবিয়ে রাখলে কষ্ট ভোলা সম্ভব হবে।

* যোগাযোগ বন্ধ করা

বিচ্ছেদের পরেও অনেকে প্রাক্তনের ছবি দেখে নীরবে চোখের জল ফেলেন। অনেকে সমাধমাধ্যমে তার গতিবিধি নজরে রাখেন। কিন্তু এগুলো করে কষ্ট কমানো যায় না। যে গেছে তার জন্য মন খারাপ না করে নতুন কিছুতে মন দেওয়া প্রয়োজন। মনের কষ্ট প্রিয় কোনো মানুষকে বলতে পারেন। যদি সব কথা না বলা যায়, তা হলে ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। এতে কিছুটা হলেও কষ্ট কমতে পারে।

মনোরোগ চিকিৎসকরা বলছেন, সময় এ ক্ষেত্রে ক্ষতে প্রলেপ লাগাতে সাহায্য করে। তাই কষ্ট ভোলার জন্য সময় দেওয়া প্রয়োজন। তবে যদি বিচ্ছেদের অভিঘাতে খাওয়া-ঘুম ও দৈনন্দিন জীবনে তার খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করে, তা হলে কাউন্সেলিং করানো দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।