ঢাকা, বুধবার, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেই বিগড়ে যাবে জীবনের ছন্দ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৪
কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেই বিগড়ে যাবে জীবনের ছন্দ

ঘরে-বাইরে সব জায়গায় কাজের চাপ। অফিসে কাজ শেষ করার তাড়া, সংসারের দায়-দায়িত্ব— সব মিলিয়েই উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা যেন ঘিরে ধরছে।

মনের ওপর চাপ বেড়েই চলেছে। আর এই মানসিক চাপের সঙ্গে লড়তে লড়তে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।  

অনিদ্রা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, ওজন বাড়া তো আছেই, স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দিচ্ছে অনেকের। এ সবের কারণই হলো ‘স্ট্রেস হরমোন’র ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়া।  

মানসিক চাপে ভুগলে স্ট্রেস হরমোনের কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তো বাড়েই, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দেয়।

কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে কী কী লক্ষণ দেখা দেবে?

এই বিষয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকলেও এটা হতে পারে। শরীর যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কর্টিসল ক্ষরণ করে, তখন হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের আশঙ্কা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত কর্টিসলের কারণে মেদও জমে। ওজনও বাড়তে থাকে।

আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন, ঘুমের সমস্যা শুরু হতে পারে। চিকিৎসকের কথায়, যার কম ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যা নেই, তিনিও ঘুমের ঘাটতিতে ভুগবেন। শুলে ঘুম আসতে চাইবে না। মাথায় হাজারো চিন্তা ঘুরবে। দিনভর ক্লান্তি ভাব থাকবে। কাজে উৎসাহ পাওয়া যাবে না।

কর্টিসল প্রভাব ফেলতে পারে স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও। হঠাৎ মনখারাপ, অবসাদ, ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হওয়াও অসম্ভব নয়। চিকিৎসকের কথায়, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে গেলে হৃৎস্পন্দনের হার বাড়তে পারে। তেমনই অতিরিক্ত অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ ও রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। ক্রনিক স্ট্রেসের কারণে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

শ্বাসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়লে তার খুব খারাপ প্রভাব পড়ে শরীরে। সব সময়ে ঝিমুনি আসবে, ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়বে। ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে, এমনকি, অস্টিয়োপোরসিসের লক্ষণও দেখা দিতে পারে। সেই ক্ষেত্রে গাঁটে গাঁটে ব্যথা ভোগাবে, হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ঘাটতি হয়ে হাড় দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই কর্টিসল হরমোনের প্রভাব কমাতে হলে মানসিক চাপ কমাতে হবে। সেজন্য নিয়মিত শরীরচর্চা, মেডিটেশন বা ধ্যান জরুরি। রাতে টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। আর সবচেয়ে বেশি জরুরি সুষম আহার। বাইরের যেকোনো খাবার, ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করার জন্য দায়ী। ঘরে তৈরি হালকা খাবার, ভাত-রুটি, ডাল, সবজিতেই শরীর সুস্থ থাকবে। নিয়ম করে খেতে হবে প্রোটিন। প্রতিদিনের খাবারে মাছ, মাংস বা ডিম রাখতেই হবে। নিরামিষ খেলে সয়াবিন, দুধ, ছানা, পনির, বিভিন্ন ডাল খেতে হবে। আর রাতে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করলে চলবে না। এতেও মানসিক চাপ বাড়ে। ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে বৈদ্যুতিক ডিভাইস দূরে রাখলে ভালো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।