প্রতিদিন মেডিটেশন করলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এছাড়া অমনোযোগ দূর করতে মেডিটেশন বা ধ্যান খুব ভালো কাজ করে।
* সিদ্ধাসন
সিদ্ধাসন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। এটি স্নায়ুতে ভারসাম্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই আসন করতে হলে প্রথমে পা সোজা করে বসতে হবে। তারপর ডান পা বাঁকিয়ে পা মেঝেতে শরীরের খুব কাছাকাছি রাখতে হবে। এবার বাঁ পা বাঁকিয়ে বাঁ পা ডান পায়ের ওপরে রাখতে হবে। পায়ের তলা ডান ঊরু স্পর্শ করবে। ডান পায়ের আঙুলগুলো ঊরু এবং বাঁ পায়ের মাঝখানে এবং বাঁ পায়ের আঙুলগুলো ঊরু এবং ডান পায়ের মাঝখানে টেনে আনতে হবে। যদি শরীর সোজা রাখা কঠিন হয় বা হাঁটু মেঝেতে না ঠেকে তাহলে বসার জন্য কুশন ব্যবহার করতে পারেন। এবার এই ভঙ্গিতে ধ্যান করুন।
* পদ্মাসন
পদ্মাসন ভঙ্গিতে মেডিটেশন করলে শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে। এই আসনটি করার জন্য প্রথমে পা সোজা করে বসতে হবে। এরপর বাঁ পা এমনভাবে ভাঁজ করতে হবে যেন বাঁ পা তির্যকভাবে ডান ঊরুতে এবং বাঁ গোড়ালি যতটা সম্ভব নাভির কাছাকাছি থাকে। তারপর ডান পায়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে উল্টো দিকে ডান গোড়ালিটি নাভির কাছাকাছি রেখে ধ্যান করতে হবে।
* বজ্রাসন
বজ্রাসন করতে হলে পা দুটো ভাঁজ করে হাঁটু গেড়ে বসতে হবে। খেয়াল রাখবেন, যাতে এ রকমভাবে বসার সময় দুই পায়ের বড় আঙুলটি একে অপরকে স্পর্শ করে। গোড়ালি সামান্য বাইরের দিকে রাখবেন। এবার এই ভঙ্গিতে বসে মেডিটেশন করতে হবে। এই আসন শরীরের হজমশক্তিকে উদ্দীপিত করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খাবার খাওয়ার পর ৫/১০ মিনিটের জন্য বজ্রাসনে বসা শরীরের জন্য উপকারী।
* সুখাসন
সুখাসন করতে হলে দুটি পা ভাঁজ করে একে অপরের ওপর রাখতে হবে। এভাবে বসে মেডিটেশন করা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কারণ এই ধ্যানমূলক আসন হলো সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক। যাদের সিদ্ধাসন, বজ্রাসন বা পদ্মাসনে দীর্ঘ সময় ধরে বসতে অসুবিধা হয় তাদের এই ভঙ্গিতে বসে মেডিটেশন করতে পারেন।
* স্বস্তিকাসন
স্বস্তিকাসন অনেকটা সুখাসনের মতোই। ডান পা-টা বাঁ পায়ের ওপর রেখে এবং বাঁ পা ডান পায়ের তলায় রেখে বসতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন দুটো পায়ের পাতা মাটি স্পর্শ করে। এই ধ্যানমূলক আসনও খুব আরামদায়ক। এই ভঙ্গিতে বসে মেডিটেশন করতে পারেন।
মেডিটেশন করতে যেসব মানতে হবে
চোখ বন্ধ করে, একমনে বসে থাকলে সময়ের জ্ঞান থাকে না। তাই যতটুকু সময় ধরে ধ্যান করতে চান, সেই অনুযায়ী টাইমার সেট করে নিন। টাইমার সঙ্গে রাখলে বার বার চোখ খুলে সময় দেখার প্রবণতা কমবে। একাগ্রতাও বাড়বে।
আশপাশে কী হচ্ছে, তা ভুলে যান। হালকা কোনও যন্ত্রসঙ্গীত বা ‘মেডিটেশন মিউজিক’ শুনতে পারেন। চোখ বন্ধ করে শুধু শ্বাস-প্রশ্বাসের ছন্দে মন দিতে চেষ্টা করুন।
মেডিটেশন করার সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক চক্র গুনতে পারেন। শ্বাস নেওয়া থেকে শ্বাস ছাড়া পর্যন্ত একটি চক্র সম্পূর্ণ হয়। এভাবে পাঁচ মিনিটে কতগুলো চক্র বা বৃত্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে, তা খেয়াল করুন।
মেডিটেশন বা ধ্যান করতে করতে অনেকেই মন্ত্র উচ্চারণ করেন। গৌতম বুদ্ধের অনুগামীরা ধ্যান করার সময়ে বিশেষ কিছু মন্ত্র উচ্চারণ করে থাকেন। নির্দিষ্ট কোনো মন্ত্র না জানলেও অসুবিধা নেই। শান্ত মনে এক থেকে একশো গুনলেও চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৪
এএটি