ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

শহরে থাকেন, সাবধান!

রানা রায়হান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১১

ঢাকা: শহুরে মানুষের মস্তিষ্কে বিপদ সংকেতবাহী স্নায়ুগুলো চাপের মুখে অতিসক্রিয় হয়ে উঠছে। গ্রামের মানুষের চেয়ে শহুর মানুষের মস্তিষ্ক ভিন্নভাবে কাজ করে।

সম্প্রতি পরিচালিত একটি সমীক্ষায় বিজ্ঞানীরা এমন তথ্য পেয়েছেন।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের দুটি অংশে আবেগ ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রিত হয়। আর নানা চাপে এগুলো অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর ফলে শহুরে মানুষের মানসিক সমস্যার হার বেড়ে যায়।

এর আগের গবেষণায় দেখা যায়, শহরে বসবাসরত মানুষের ২১ শতাংশ উদ্বেগ, গোলযোগ ও মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছে। এছাড়া শহরে যাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা তাদের সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ।

নতুন সমীক্ষায় জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আন্ড্রিয়াস মেয়ার-লিন্ডেনবার্গ ৫০ জনের বেশি স্বাস্থ্যবান লোকের মস্তিষ্ক স্ক্যান করেছেন। এসব লোকের সবাই গ্রাম থেকে বেশ দূরত্বে বড় শহরে বাস করেন। সমীক্ষার অংশ হিসেবে তাদের কিছু গাণিতিক কাজ দেওয়া হয়। এদের সবাই কাজটি করতে গিয়ে উদ্বেগের শিকার হন।

সমীক্ষার ফলাফল বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারী সবার মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশটি চাপের মুখে অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে মেয়ার-লিন্ডেনবার্গ বলেন, ‘আমরা জানি, অ্যামিগডালা কী করতে পারে। এটা বিপদ সংকেতবাহী মস্তিষ্ক। এই কারণে উদ্বেগ ও বিষাদের সঙ্গে যুক্ত। ’

শহরে জন্ম নেওয়া লোকজনের সিনগুলেট কর্টেক্স নামে পরিচিত মস্তিষ্কের আরেকটি অংশও অতিসক্রিয় থাকে।   মেয়ার লিন্ডেনবার্গ বলেন, ‘আমরা জানি, সিনগুলেট কর্টেক্স আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশগত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে। ’

তিনি বলেন, মস্তিষ্কের এই অতিসক্রিয়তার কারণেই মানসিক সমস্যা হয়। লিন্ডেনবার্গ বলেন, ‘আমাদের ধারণা, চাপের কারণেই মস্তিষ্কের অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হয়। এই অনুমান মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অঞ্চলের সংবেদনশীলতার ওপর ভিত্তি করে। আপনি যখন একটি প্রাণীর মস্তিষ্কে চাপ বা পীড়া দেবেন, মস্তিষ্কের ওই অঞ্চলের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হবে। এগুলো হয়ত সহনীয় পর্যায়ের, তবে তা প্রাণীকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে, চাপ বা পীড়নেই এটা হয়। চাপ যেখানে আছে, সেখানে এটা দেখা দেবে। এরপর ধীরে ধীরে তা মানসিক বৈকল্যের দিকে যাবে। ’

ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সাল নাগাদ প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করবে। গড়ে শহরে বাসকারি লোকজন স্বাস্থ্যবান হয় আর পুষ্টি, জন্মনিরোধ ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা ভাল পেয়ে থাকেন। তবে শহরে বাস করলে মারাত্মক মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।