ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

সীমানা পেরিয়ে ময়নামতি যখন ঠিকানা

ওয়ালীউল্লাহ মিঠু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৩
সীমানা পেরিয়ে ময়নামতি যখন ঠিকানা

শীত তার সকল প্রস্তুতি গুছিয়ে বেশ ভালভাবেই প্রকৃতিতে প্রভাব খাটাতে শুরু করেছে। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরাও তাদের সারা বছরের পড়ালেখার হিসেব শেষ করেছে ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার মাধ্যমে।

আর তাই সবার মন চাচ্ছিল একটু অচেনা-অজানায় ঘর ছেড়ে, দল হারিয়ে ঘুরে বেড়াতে। ঠিক যেমনটি চাওয়া তেমনটি পাওয়া হল দিনটি ছিল বুধবার, ডিসেম্বরের ১৯ তারিখ যখন সকাল ১১ টায় ক্যাম্পাসের একটি বাস পুরাতন কলাভবনের সামনে এসে গেট মেলে ধরে সবাইকে সিট নেয়ার আমন্ত্রণ জানাল। সবাই অবশ্য অনেক আগেই হাজির হয়েছিল ডিপার্টমেন্টে এবং অধীর হয়ে অপেক্ষা করছিল কখন বাস আসবে।

আকাশের অবস্থাটা খুব একটা ভাল ছিল না সেদিন। সূর্য মামা মনে হয় অসš‘ষ্ট ছিল। কারণ সূর্য বের হতে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে ছিল। এক সময় সূর্য মামা একটু উঁকি দিতেই সবাই উল্লসিত।

আমাদের সঙ্গে ডিপার্টমেন্টের দু-জন শিক্ষকও ছিলেন। যে কারণে সবাই একটু সন্ধিহান ছিল ইছামত আড্ডা দিতে বাধা আসে কি না। কিন্তু সেই দ্বিধা এক সময় আর থাকলো না, যখন সুরেলা রাইসুল গান ধরল তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবরে- - - -আর অমনি সবার সাথে দু-জন স্যারও কন্ঠ মেলালো। সবাই অবাক হয়ে আনন্দে হারিয়ে যেতে শুরু করল।

ময়নামতি এলাকার প্রত্নতত্ত্বস্থানগুলো জরিপ করাই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। সিদ্ধান্ত হল আমরা বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর (বার্ড) হোস্টেলে রাত্রি যাপন করবো। আর দিনের বেলায় বিভিন্ন প্রত্নতত্ত্ব স্থানে জরিপ করবো। সন্ধ্যা ৬ টায় আমরা বার্ডে পৌঁছালাম। পূর্বসিদ্ধান্তানুযায়ী রাতে আমরা বার্ডের হোস্টেলে থাকলাম সবাই।

পরদিন ভোরে বের হয়ে সারাদিন আমরা শালবন বিহার, ময়নামতি জাদুঘর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ইটাখোলা মূড়া দেখলাম। সন্ধ্যায় আবার আমরা বার্ডে ফিরে এলাম। পরদিন শুক্রবার সকালে রুপবান মূড়া, ২য় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় উপমহাদেশে নিহতদের সমাধি ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি, লতিকোট মূড়া, রানী ময়নামতির প্রাসাদ ভাল করে দেখলাম। ছবি তোলার হিড়িক পড়ত প্রায়ই। সবাই অনেক মিশে গিয়েছিলাম।

এই ঐতিহাসিক জায়গাগুলোর ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হল আমাদের। শুক্রবার বিকাল ৪টায় আমরা আপন ঠিকানা জাহাঙ্গীরনগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আবার এমনি অজানায় আনন্দে হারানোর আশা নিয়ে সবাই আপন সীমানায় ফিরে এলাম।

ওয়ালীউল্লাহ মিঠু
শিক্ষার্থী
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
মোবাইল নং-০১৯২৩৫৯০৬৯৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।