ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

রূপক-সায়মার প্রেমের সাতকাহন ও ফেসবুক লাভ!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩
রূপক-সায়মার প্রেমের সাতকাহন ও ফেসবুক লাভ!

রূপকের সাথে সায়মার সম্পর্ক ছিল ৫ বছর। এরমধ্যে ৩ বছর ছিল প্রেম আর দু’বছর সংসার।

প্রেমের মাঝপথে সায়মা প্রবাসে চলে যায়। রূপক থেকে যায় স্বদেশে। দু’জনের সম্পর্ক ছিল অবিচ্ছেদ্য। না পাওয়ার যন্ত্রণা প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফিরতো তাদের।

সায়মা প্রবাসে অবস্থান করলেও দু’জনের ভালোবাসার বন্ধন ছিল অটুট। চিড় ধরেনি একটুকুও। এক বছর প্রবাস জীবন শেষে সায়মা ফিরে এলেন প্রিয় মাতৃভূমিতে। ভালোবাসার অকৃত্রিম বন্ধনে বাঁধলেন রূপককে। প্রেমের শেষ পরিণতিতে বিয়ে হলো এ জুটির। দু’জন তখন দু’জনার।

মাস দুয়েক এ নদীমাতৃক দেশের আলো-বাতাসে থেকে সায়মা ফিরে গেলেন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী এক রাষ্ট্রে। ততোক্ষণও অমর আর অব্যয় দু’জনার সম্পর্ক। অত:পর মাস ছয়েক প্রবাসে থেকে সায়মা ফের ফিরলেন স্বদেশে।

প্রিয় স্বামীর সান্নিধ্যে থাকলেন আরো মাস ছয়েক। আসলে ততক্ষণে রূপক চিনতে পারেননি সায়মাকে। আবিস্কার করতে পারেননি সায়মার রহস্যাবৃত চরিত্র।

সায়মা যখন আবারো বিদেশে বাবা-মা’র কাছে ফিরে গেলেন অতঃপর রূপক জানতে পারলেন সায়মা চরিত্রের ভেতরকার চরিত্র।

এক সময়ের পৃথিবীকে না চেনা, পরিবারের বন্দির শেকলে বন্দি থাকা সায়মা হয়ে পড়লেন ফেইসবুকে আসক্ত। ক্রমশ ভুলতে বসেন তার ভালোবাসার মানুষকে। তার চারপাশে হঠাৎ করেই সুদর্শনের ছড়াছড়ি। প্রেম প্রস্তাব পেতে পেতে সায়মা এক সময় বেসামাল হয়ে পড়লেন।

রূপক আবিষ্কার করলেন, দু’জনের অব্যয় সম্পর্কের মাঝে ফাটল ধরিয়ে প্রবেশ করলেন এক তরুণ। না, সে রূপকের চেয়ে সুদর্শন নন। যোগ্যতার মাপকাঠিতেও রূপকের সমমানের নন। কিন্তু নিজের অর্ধাঙ্গী সেই রহস্যময় তরুণের প্রেমে পড়ে গেলেন।

ফেইসবুক থেকে সেই তরুণের সাথে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে রূপক আর সাইমার মাঝে শুরু হলো তুমুল বাকবিতণ্ডা। এরপর বিচ্ছেদের করুণ সুর।  

সায়মার মা-বাবা দেশে এলেও, ফিরলেন না সায়মা। উড়ে গেলেন ওই রাষ্ট্রের এক রাজ্যে থাকা ফুফাতো বোনের কাছে। চরম কষ্টের ঘূর্ণিপাকে নির্বাক সায়মার বাবা, দিশেহারা মা ফিরলেন প্রিয় স্বদেশে। সায়মা না আসায়, তাদের ভাবনা একটাই কী জবাব দেবেন তাদের জামাইকে?

ও প্রান্তে সায়মার স্বামী তখনও আশায় ছিলেন প্রিয়তমা স্ত্রী হয়তো দেশে ফিরবেন। সবকিছু ভুলে আবারো নতুন করে তার স্ত্রীকে ভালোবাসতে শিখবেন। স্ত্রী যেন আর পর পুর“ষের প্রতি আসক্ত না হয়, সেজন্য পৃথিবীর সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দেবেন।

ধরিয়ে দিবেন স্ত্রীর ভুলগুলো। কিš‘ না, রূপকের অকৃত্রিম ভালোবাসাকে সায়মা তু”ছ জ্ঞান করলেন। প্রমাণ করলেন রূপকের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল ক্ষণিকের মোহ। তার কাছে হঠাৎ করেই মূল্যবান হয়ে উঠলো ‘ফেইসবুক লাভ’।

ডিজিটাল লাভে পাগল প্রায় সায়মা বিদেশে থেকেই প্রিয়তম স্বামীকে ডিভোর্সের হুমকি দিলেন। স্বামী ফোন দিলেই যা”েছতাই আচরণ করতে শুর“ করলেন।

মাস তিনেক পরেই তিলে তিলে তিলোত্তমা করে গড়ে তোলা সায়মা-রূপকের সম্পর্কের যবনিকাপাত ঘটলো। প্রেম দ্বৈরথে হেরে গেলেন রূপক। জয়ী হলেন সেই রহস্যময়ী ফেইসবুক তর“ণ।

জীবনের এ রূঢ় বাস্তবতায় একাকী রূপক এখন শুধুই দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। নতুন করে আর কাউকে ভালোবাসতে পারেননি। অথচ সায়মা সেই তর“ণকে নিয়ে এখন দিব্যি ঘর-সংসার করে যা”েছন।

সায়মাকে নিয়ে রূপকের সব স্বপ্ন দুমড়ে মুচড়ে গেছে। এক সময় যে সায়মা ছিল রূপকের জীবনের অফুরান প্রেরণার উৎস, সময়ের ঘূর্ণায়মান স্রোতে সেই সায়মাই এখন রূপকের জীবনের দুঃসহ যন্ত্রণার মূল উপজীব্য।

রূপক এখন নি:সঙ্গ। রাত জাগেন। ফেইসবুকে অহেতুক বসে থাকেন। নষ্ট প্রেমের বলি হয়ে নি:সঙ্গ চিত্তে ল্যাপটপের বাটন চাপেন।

রূপকের চোখের নিচে কালো রেখা ঘুমহীন রাতের কাব্য রচনা করে। রূপক ভুলতে চান তার ফেলে আসা অতীত। সব ভুলে সামনে এগুতে চান। কিš‘ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় সায়মার অদৃশ্য উপ¯ি’তি।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।