ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

স্বপ্নের সব চমক এক সাথে নন্দনে

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৩
স্বপ্নের সব চমক এক সাথে নন্দনে

আমাদের খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের মতোই গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হচ্ছে বিনোদন। কিন্তু সবার জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা ঢাকায় নেই বললেই চলে।

পরিবারের সবাইকে নিয়ে কম খরচে বিনোদন দেয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রায় ১০ বছর আগে ঢাকার অদূরে যাত্রা শুরু করেছিল নন্দন পার্ক। যা আজ সবার প্রিয় বিনোদন কেন্দ্র।

আর সেই স্বপ্ন পূরনের এখনো কাজ করছেন নন্দনের অন্যতম পরিচালক এনামুল হক চৌধুরী। তিনিই জানালেন নন্দনের আদ্যপান্ত।  

উদ্দ্যোক্তা: যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীদের অর্থায়নে নন্দন পার্ক লিমিটেড এবং ভারতের বৃহত্তম পার্ক পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান “নিকো পার্কস এন্ড রিসোর্টস লিঃ” এর সাথে যৌথ উদ্দ্যোগে এই পার্ক প্রতিষ্ঠিত।

অবস্থান-আয়তন: ঢাকার সন্নিকটে নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কে বি.কে.এস.পি এবং চন্দ্রার মাঝামাঝি সাভারের বাড়ই পাড়ায় ৮০ বিঘা জায়গা নিয়ে এই পার্ক অবস্থিত।

বিশেষত্ব: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বিষ্ময়কর, অভিনব, নয়নাভিরাম, রোমাঞ্চকর, নান্দনিক নন্দনপার্ক। স্বজন, সহকর্মী আর পরিবারের সব বয়সের সবাই মিলে আনন্দময় সারাদিন কাটাতে নন্দন তুলনাহীন।

nandan5dসপরিবারে সারাদিন আনন্দ উপভোগ করার জন্য নন্দনপার্ক সাজানো হয়েছে বিশেষভাবে। যেন সত্যিকার আনন্দমেলা। এর রাইডগুলো এমনভাবে বাছাই করা হয়েছে যেন কোনো ভীতি ছাড়াই পরিবারের সবাই একসাথে এগুলোতে চড়তে এবং মজা করতে পারেন। রোমাঞ্চকর, আনন্দময় আর ভীতিহীন এ রাইডগুলো ছাড়াও পার্কে রয়েছে প্রচুর খোলা জায়গা, প্রসস্ত রাস্তা, মাটির টিলা, বসার বেদী, গাছের ছায়া, ঢেউ খেলানো জলরাশি আর সবুজের সমারোহ। এখানে আগত অতিথিরা হেঁটে বেড়াতে পারেন আর খোলা আকাশের নিচে সবুজের মাঝে বসে শুয়ে বিশ্রাম করতে পারেন।

যাদের জন্য: পুরো পরিবারের সবাইকে নিয়ে সারাদিনের মজা বা বিনোদনের যথার্থস্থান হচ্ছে নন্দন পার্ক। সমাজের ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী প্রত্যেকের বিনোদন আর অবসর কাটানোর অনন্য স্থান নন্দন পার্ক। প্রবেশমূল্য ও রাইড সমূহের খরচ আপনার সামর্থের মধ্যেই।

যা যা আছে: এ পার্কে রয়েছে অত্যাধুনিক বিশ্বমানের ২৮ টি রাইড যার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ফাইভ ডি সিনেমা, বাম্পার কার, কেবলকার, ওয়াটার কোষ্টার, মুনরেকার, টিল্ট এ হোর্য়াল, ক্যাটারপিলার, প্যাডেলবোট, জিপ স্লাইড, রক ক্লাইম্বিং, প্রভৃতি এবং ফান আর মাস্তির অপূর্ব আয়োজন ওয়াটার ওয়ার্ল্ড। প্রতিটি রাইডই সব বয়সের সবার জন্য দারুণ উপভোগ্য।

গানের সুরে পানির নৃত্য মিউজিকাল ফাউন্টেন পার্কের অতিথিদের জন্য এক অনন্য চমক যা শুধুই উপভোগ আর অনুভব করা যায়, যা বর্ণণায় সব ভালোলাগা তুলে ধরা কঠিন।

“ফাইভ-ডি সিনেমা থিয়েটার”

নন্দন পার্ক বাংলাদেশে বিনোদনের ইতিহাসে সংযোজন করেছে এক নতুন মাত্রা। বাংলাদেশে এই প্রথম নন্দন পার্কে স্থাপিত হয়েছে “ফাইভ-ডি সিনেমা থিয়েটার” - প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের এক নবতর সংযোজন, যা আপনাকে দেবে এক অসাধারণ মজার অভিজ্ঞতা।

“ফাইভ-ডি সিনেমা থিয়েটার” এ আপনার বসার চেয়ারটি বিশেষভাবে সংযোজিত, যা নির্দিষ্ট ধারায় ছবির কাহিনীর সাথে তাল মিলিয়ে নড়াচড়া করবে। অর্থাৎ এখানে আপনি সিনেমার গল্পের সাথে সক্রিয় চরিত্র হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন।

ওয়াটার ওর্য়াল্ড এক আলাদা বিনোদন জগৎ

নন্দন ড্রাই পাকের্র সাথে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড  নিয়ে এসেছে পানির রোমাঞ্চকর সব খেলা, যা আনন্দের এবং গরমে প্রাণ জুড়ানো। এখানে সব মজা নিতে পারে পুরো পরিবারের সবাই।

nandan2নন্দন ওয়াটর ওয়ার্ল্ডে আছে:

ওয়েভ পুল : সমুদ্রের স্বাদ নিয়ে এলো ওয়েভ পুল। সমুদ্রের মজা পাওয়ার জায়গা সমুদ্র ছাড়া এই একটাই। নানান ঢেউয়ের মেলা এখানে। হালকা ঢেউ , ভারী ঢেউ , উত্তাল ঝড়ো ঢেউ। ঢেউয়ের সাথে নাচবে মন,  সাথে শরীর যাবে ভেসে।

স্যুট ও ফ্যামিলি কার্ভ টিউব স্লাইড: প্রায় তিন তলা সমান উচ্চতা থেকে দুটি ভিন্ন ধরনের টিউবের ভেতর দিয়ে সোজা পানিতে। প্যাঁচানো পথে রাবারের ভেলায় চেপে  পানির সাথে স্লাইড করে নামা। এ রাইডে আছে জোশ, আছে উত্তেজনা।

ওয়েভ রানার: একেবারে নয়, কিছুটা গড়িয়ে, স্লাইড করে তীব্র গতিতে নামা, এর নাম ওয়েভ রানার। দারুণ থ্রিলিং এক ফান গেম। প্রায় ৭০ ফুট ওপর থেকে রাবারের ভেলা বা ম্যাটে চড়ে টিউবের  মাঝ দিয়ে সোজা গিয়ে পড়া  নন্দন সাগরের মাঝে, মানে পুলে। এক অন্য রকম আনন্দ। এ যেন সমুদ্রের উচু ঢেউয়ের ওপর দিয়ে সারফেসিং করে ভেসে যাওয়া। এ রাইড প্রচন্ড উত্তেজনার।

ডুম স্লাইড : পানির মাঝে ছোট্ট পাহাড়, পানির মাঝে ঢেউ, ডুম স্লাইডের পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে কেউ। পুলের মাঝখানে এ স্লাইডের মজা বেশ। হাত পা ছড়িয়ে পানির মাঝে পিছলে পড়ার মজা মানেই ডুম স্লাইড। সোজা হয়ে চিৎ হয়ে কিংবা কাৎ হয়ে ইচ্ছেমতো গড়িয়ে পানিতে মাছের মত সাঁতার কিংবা হুটোপুটি। ডুম স্লাইড। হলো মজার পাহাড়, যার ওপরে আছে এক ঝরনা। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পানিতে পড়ার আনন্দ এনে দেয়ে ডুম স্লাইড।

মাল্টি প্লে জোন: পানিতে মজার খেলার জায়গা। যেখানে খেলা আছে ধুলা নেই। পানির রাজ্যে ধুলা আসবে কোথা থেকে? সাঁতার শেখা আর খেলা দুটোই হবে এখানে। এখানে আছে দোলনার দোল, আর আছে স্লিপার। এক যাদুর বালতি ওপর থেকে ঢেলে দেবে  রাশি রাশি পানির ফোয়ারা। এখানে নামা মানে বাসার কথা ভোলা। সারাদিন পানির মাঝে খেলা । ছোটদের এখানে ডুবে যাওয়ার ভয় নেই, আছে অপার আনন্দে ভেসে যাওয়ার মজা।

ওয়াটার ফল এন্ড মিষ্ট: ওয়াটার ফল এন্ড মিষ্টে এলে পাওয়া যাবে  কুয়াশার মত এক মিষ্ট, যা ছড়িয়ে থাকে পুরো এলাকা জুড়ে। এক জলপ্রপাত থেকে পানি পড়ছে জলপ্রপাতের কিনারায় দাড়িয়ে দেখা যাবে ইলশেগুড়ির চেয়ে এক মিহি বৃষ্টি ঝরছে চারপাশে। আরো আছে নানা চমক জাগানো আলোর খেলা।   

Nandon-Directerরেইন ড্যান্স: নন্দন ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের এ এক রহস্যময় জায়গা। আছে মিউজিক আর আলোর খেলা। ওপর থেকে পড়ছে বৃষ্টির অঝোর ধারা। মনে হবে যেন প্রাকৃতিক বৃষ্টির মধ্যে আপনি ভূলে যাবেন বর্তমান, মিউজিকের তালে ফিরে পাবেন আপনার স্মৃতিময় দিনগুলো। আর সুরের মুর্ছনায় মন ও দেহ নেচে উঠবে। হবে ফান আর মাস্তি।    

ওয়াটার গেমস বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফান গেমস আর ওয়াটার পার্কগুলো সবচেয়ে জনপ্রিয় বিনোদন পার্ক হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশের সর্ব প্রথম নন্দন ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে রয়েছে সেই ওয়াটার রাইড গুলো এখন।

যেহেতু ওয়াটার ফানের মজা নিতে গেলে বিশেষ পোশাকের দরকার, তাই ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে রয়েছে লকার ও চেঞ্জ রুম। আছে এক্সট্রা পোশাক ও তোয়ালে।

ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের পানি প্রতিদিন বিশেষ প্রক্রিয়ায় পারিষ্কার করা হয়। যার ফলে পানি সবসমযই থাকে স্বচ্ছ ও জীবানুমুক্ত।

ওয়াটার ওয়ার্ল্ড এর ফান গেমগুলো এমন ভাবে তৈরি যেখানে পানিতে ডুবে যাওয়ার ভয় নেই, সাঁতার জানা বা না জানা যে কেউ এর মজা নিতে পারবে।

নন্দনের সবগুলো রাইড ভয়হীন উত্তেজনার। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে নেই আহত হওয়ার ভয়।

কীভাবে যাবেন: যেতে পারেন দুই ভাবে দুই রুটে। ঢাকা-সাভার-নবীনগন-চন্দ্রা রুটে অথবা ঢাকা-আশুলিয়া-চন্দ্রা । ঢাকা থেকে বিআরটিসি, হানিফ মেট্রো ও তিতাস পরিবহনে করে যেতে পারেন নন্দন পার্কে।

কয়দিন খোলা: সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ০৮টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকে।

খাবার দাবার: রুচিসম্মত, পরিস্কার, ফ্রেশ আর স্বাদে ভরা আপনার পছন্দের সব ধরনের দেশীয় খাবার সাশ্রয়ী দামে পাবেন নন্দন পার্কে।

পার্কিং ব্যবস্থা: একসাথে ৫০০ গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা রয়েছে এ পার্কে।

নিরাপত্তা: অতিথিদের জন্যে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিজস্ব একদল নিরাপত্তা কর্মী তৈরি করেছে সুকঠিন নিরাপত্তা বেষ্ঠনী। আছে আনসার বাহিনী।

বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে নন্দন পার্ক বাংলাদেশের বৃহত্তম পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে দর্শনার্থীদের নির্মল ও নিরাপদ আনন্দদানের অভিযাত্রায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যস্ততম শহরগুলোর একটি ঢাকার কর্মব্যস্ত নাগরিক জীবনের মাঝে নন্দন পার্ক সবুজে ঘেরা এক টুকরো স্বর্গোদ্যান।

জীবনে সফল ব্যবসায়ী এনামুল হক চৌধুরী কখনোই শুধু নিজের লাভের কথা ভাবেননি। তিনি বিশ্বাস করেন সততার সঙ্গে পার্কে আসা অতিথিদের সেবা দিয়েই অর্জন করেছেন সবার আস্থা।

কৃতজ্ঞতা: জুবায়েদ আল হাফিজ

হেড অব মার্কেটিং

নন্দন পার্ক লিমিটেড

Photo: NooR

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।