ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ডিজাইনার মুসলিম আহমেদ

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৪
ডিজাইনার মুসলিম আহমেদ

ফ্যাশন নিয়ে তার ভাবনাটা সেই ছাত্রজীবন থেকেই। দেখেছেন দেশ-বিদেশের ফ্যাশন ট্রেন্ড।

বুঝেছেন তারুণ্যের চাহিদা। তখনই ফ্যাশন সম্পর্কিত কাজে মনোনিবেশের চিন্তা মাথায় আসে তার। আর
ছোটবেলা থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন নিজে কিছু করবেন। আর হ্যাঁ, তার স্বপ্নের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্মসংস্হান হবে বেশ কিছু মানুষের। তিনি বিশ্বাস করতেন চেষ্টা, পরিশ্রম আর সততা থাকলে উন্নতি হবেই, সাফল্য আসবেই।

নিজের স্বপ্ন ও সাফল্য সম্পর্কে এভাবেই বলছিলেন তারুণ্যের ব্র্যান্ড মুসলিম কালেকশনের নিত্যনতুন ডিজাইনের শার্টের নেপথ্যের মানুষ মুসলিম কালেকশন ও মুসলিম কালেকশন এক্সক্লুসিভের স্বত্বাধিকারী মুসলিম আহমেদ।

মুসলিম কালেকশন এক্সক্লুসিভের প্রধান এই ফ্যাশন ডিজাইনার সহজেই বোঝেন তারুণ্যের ফ্যাশন এবং স্টাইল। আর তাই এরইমধ্যে সারাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে উঠেছে তার ডিজাইন করা মুসলিম কালেকশনের শার্ট। তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি গড়েছেন সফল ক্যারিয়ার। নিজের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কিছু পুরস্কারও যুক্ত হয়েছে তার ঝুলিতে।

সম্প্রতি শ্রেষ্ঠ ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে বাবিসাস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন মুসলিম আহমেদ। ২০১২ সালে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আয়োজিত ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় তার ডিজাইন করা শার্টের জন্য সেরা ফ্যাশন হাউজের পুরস্কার পায় মুসলিম কালেকশন।

মুসলিম আহমেদ জানান, তখন তিনি সোহরাওয়ার্দী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বিএ’র ছাত্র। বিএ পরীক্ষা দিয়েই ভারতে যান ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের ওপর পড়াশোনা করতে। ঢাকার কেরানীগঞ্জ তখন সারাদেশের তৈরি পোশাকের পাইকারি মার্কেট হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশে ফিরে ভাবলেন, এখানে কিছু করলে আন্তর্জাতিক ফ্যাশনটাকে সারাদেশের তরুণদের মাঝে সহজেই ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। যেই ভাবনা সেই কাজ। মাত্র ১২ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় মুসলিম কালেকশন ও মুসলিম গার্মেন্টসের।

মুসলিম আহমেদ বলেন, ‘মুসলিম কালেকশনে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ৭ শতাধিক দেশি-বিদেশি কর্মী। শুরুতে যে গার্মেন্টস ছিল ২ হাজার স্কয়ার ফিটের, এখন সেটা হয়েছে ৮ হাজার স্কয়ার ফিট। ’ এছাড়া গত বছরের ২৬ জুন থেকে বিশাল পরিসরে যাত্রা শুরু করেছে মুসলিম কালেকশন। কেরানীগঞ্জের জিলা পরিষদ মার্কেটে মুসলিম কালেকশন এক্সক্লুসিভ নামে উধন করা হয়েছে এক হাজার স্কয়ার ফিট আয়তনের নতুন শো-রুম। মুসলিম আহমেদ বলেন, ‘এ শো-রুম চালু হওয়ায় কর্মসংস্হান হয়েছে আরো তিনশ মানুষের। এ শো-রুমে ক্রেতারা পাচ্ছেন শতভাগ প্রিমিয়ার কটন, গিজা কটন, পিওর কটন, মুসলিম স্পেশাল, ইজিপশিয়ান কটনসহ নানা ডিজাইনের আকর্ষণীয় সব ডিজাইন শার্ট ও পার্টি শার্ট। ’ এসব শার্ট তরুণদের মাঝে ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়াও ফেলেছে।

এছাড়া শিগগিরই মুসলিম কালেকশন ক্রেতাদের জন্য নিয়ে আসছে বাহারি ডিজাইনের আকর্ষণীয় সব শর্ট পাঞ্জাবি। এসব পাঞ্জাবি ক্রেতাদের মধ্যে সাড়া ফেলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি জানান, নতুন বছরে শতভাগ সূতি কাপড়ের শার্ট নিয়ে এসেছেন তারা। এসব শার্টে ফুটে উঠবে ব্যক্তিত্ব। সময় উপযোগী কাপড় ও আধুনিক ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখে এসব শার্ট তৈরি করা হয়েছে। ফরমাল ও ক্যাজুয়াল শার্টে রয়েছে চেক ও স্ট্রাইপের বাহার। এছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে বাহারি সব ডিজাইন শার্র্র্ট। চলছে গরম উপযোগী শার্টের প্রতি।

মুসলিম আহমেদ বলেন, শার্টের জন্য বোম্বে, চায়না, ইতালি, থাইল্যান্ডের বিভিন্ন কারখানা ঘুরে ভালোমানের ফেব্রিকস পছন্দ করা হয়। আর সেই ফেব্রিকস দিয়ে সুদক্ষ ও প্রশিক্ষিত দেশি-বিদেশি কর্মী দ্বারা নিজস্ব কারখানায় তৈরি হয়।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছি, সে সব দেশের তরুণদের স্টাইল ও রুচি দেখেছি। আমি যখন একটি শার্টের ডিজাইন করি, তখন তারুণ্যর চাহিদাকে মাথায় রাখি। এ ছাড়া চলমান ফ্যাশন, স্টাইল এবং বিশ্বের ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে ডিজাইন করে থাকি। ’

নতুন ডিজাইনারদের জন্য মুসলিম আহমেদ বলেন, ‘পেশা হিসেবে ফ্যাশন ডিজাইনিং বেশ চ্যালেঞ্জিং। একটা সময় ছিল যখন ফ্যাশন ডিজাইনিংকে পেশা হিসেবে নেয়ার অবকাশ ছিল না। কিš‘ সময় পাল্টেছে। এখন অনেক তরুণ ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে আসছেন। ভালো ক্যারিয়ার গড়ছেন। বর্তমান ফ্যাশন ট্রেন্ড অনেক বেশি বিস্তৃত। প্রতিযোগিতাও বেশি। যে কারণে নিজেকে প্রমাণ করার একমাত্র উপায় জেনেশুনে ভাল কাজের স্বাক্ষর রাখা। ফ্যাশনের বিভিন্ন মোটিভ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। বর্তমানে ঋতুভিত্তিক ফ্যাশন বেশ জনপ্রিয়। যে কারণে প্রত্যেকটি ঋতুর ধরন অনুযায়ী কাপড়, রঙ ও ডিজাইন নির্বাচন করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে ক্রেতাদের চাহিদার ওপর। সেই সঙ্গে বিশ্ব ফ্যাশন ট্রেন্ডের সমসাময়িক ধারণা তো থাকতেই হবে। ’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।